দেশব্যাপী চলছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি | Daily Chandni Bazar দেশব্যাপী চলছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ১৪:৩৪
দেশব্যাপী চলছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি
অনলাইন ডেস্ক

দেশব্যাপী চলছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি

করোনা মহামারির প্রায় এক বছর পার করার পর দেশব্যাপী শুরু হয়েছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি। ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদানের উদ্বোধন করা হয়। এর পর আজ রোববার শুরু হয়েছে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি। দিনের শুরুতেই রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা নিচ্ছেন সরকার ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। সারাদেশের মোট ১ হাজার ৫টি হাসপাতালে চলছে এই কর্মসূচি।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে করোনা টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনের শুরুতেই টিকা নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরে একে একে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন টিকা নেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রথম দিন টিকা নেবেন মোট ১৬২ জন।

এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনা টিকা নেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত আরাসহ তিন বিচারপতি। টিকা নেয়া অন্য দুই বিচারপতি হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও একই বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। সকাল ৯টার দিকে বিএসএমএমইউয়ে তারা টিকা নেন।

টিকা নিতে ইতোমধ্যে তিন লাখ ২৮ হাজার জন নিবন্ধন করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা টিকা নেয়ার পর অন্যরা পর্যায়ক্রমে টিকা পাবেন। তবে প্রথম ধাপে ১৫ ক্যাটাগরির মানুষ টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

রোববার দিনের শুরুতে প্রধান বিচারপতি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) ও হাসপাতালে টিকা নেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব টিকা নিয়েছেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি কেন্দ্রে।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, বিভিন্ন জেলায় এবং বিভিন্ন জায়গায় সংসদ সদস্যরা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় যেসব গণ্যমান্য ব্যক্তি আছেন তারা ওই সব কেন্দ্রে সম্পৃক্ত থাকবেন। তারা নিজেরা টিকা নেবেন ও কার্যক্রমে সহযোগিতা করবেন।

বেলা সাড়ে ১০টায় নিজেই টিকা নিয়ে চট্টগ্রামে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নিজে টিকা নিয়ে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সকাল ১০টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি টিকা নেন।

জানা গেছে, ঢাকার বাইরে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৯৫৯ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জায়গায় ২ হাজার ১৯৬টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দুজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং দুজন স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে প্রতিটি দলে চারজন সদস্য থাকবেন। টিকার জন্য নিবন্ধন করা না থাকলেও কেন্দ্র থেকে কাউকে ফেরত পাঠানো হবে না। কেন্দ্রেই নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে।

রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো- সংসদ সচিবালয় ক্লিনিক, মহাখালীতে সংক্রামক রোগ হাসপাতাল, উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, মিরপুরের ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো- সচিবালয় ক্লিনিক, ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মজীবী হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতাল, রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল, আজিমপুর মা ও শিশু হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নয়াবাজারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, পিলখানার বিজিবি হাসপাতাল, লালবাগে ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।

এ ছাড়া ডিএনসিসির মগবাজারের নয়াটোলা মাতৃসদন কেন্দ্র, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি মাতৃসদন কেন্দ্র, মিরপুর মাজার রোডের নেকি বাড়ির টেক মাতৃসদন কেন্দ্র, মিরপুরের বর্ধিত পল্লবী এলাকা মাতৃসদন কেন্দ্র ও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মাতৃসদনে করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

বংশালের কসাইটুলী নগর মাতৃসদন, হাজারীবাগে ঢাকা আহছানিয়া মিশন নগর মাতৃসদন, ধলপুরে নগর মাতৃসদন, উত্তর মুগদা মাতৃসদন ও খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া মাতৃসদন কেন্দ্রেও দেওয়া হবে করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন