![logo](https://dailychandnibazar.com.bd/assets/importent_images/logo.png)
চৈত্রের কাঠফাটা রোদ। তারপরও থেমে নেই মিন্টু। লক্ষ্য একটাই, কাজ শেষ করা। কারণ এখান থেকে যে অর্থ পাবেন তা দিয়ে চলবে নিজের লেখাপড়া আর সংসার খরচ।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামে একটি বোরো ধানখেতে অন্য কৃষি শ্রমিকদের সঙ্গে আগাছা পরিষ্কার এবং সার ছেটানোর কাজ করছিলেন মিন্টু।
এ সময় মিন্টু ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের জগন্নাথদিয়া গ্রামে মো. সাকাত আলীর (৬৮) ছেলে মিন্টু মিয়া। স্থানীয় মহাদেবপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মিন্টুর বাবাও একজন দিনমজুর। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আগের মতো কাজ করতে পারেন না।
চার মেয়েকে বিয়ে দিতে গিয়ে মিন্টুর বাবা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। দুই ভাইয়ের মধ্যে মিন্টুই বড়। ছোট ভাই নবম শ্রেণিতে পড়ে। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়ার চাপ রয়েছে তার ওপর।
কিন্তু মিন্টুর স্বপ্ন উচ্চশিক্ষিত হয়ে ভালো চাকরি করার। যাতে সংসারের অভাব দূর হয়। কিন্তু সে আশা পূরণ করতে এখন অর্থই বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নিজের লেখাপড়ার খরচ আর সংসারে সহযোগিতা করার জন্য মিন্টু নাম লিখিয়েছেন এলাকার কৃষি শ্রমিকদের দলে।
শ্রমিকের সাথে তিনি খেত খামারে কাজ করেন। করোনা ভাইরাসের কারণে কলেজ বন্ধ। তাই লেখাপড়ার পেছনে খরচ কম। এই সময়টা মিন্টু উপার্জনের পুরো টাকাই মা-বাবার হাতে তুলে দিচ্ছেন।
মো. মিন্টু মিয়া বলেন, মা-বাবা অনেক কষ্ট করে বড় করেছেন। বাবা অসুস্থ থাকায় সবসময় কাজকর্ম করতে পারেন না। কিন্তু আমার স্বপ্ন লেখাপড়া করে বড় হওয়ার। এক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সংকট। তাই স্বপ্ন পূরণের জন্য দিনমজুরি করছি।
তিনি বলেন, রোদ, বৃষ্টিতে কাজ করতে অনেক কষ্ট হয়। তারপরও কিছু করার নাই। কাজ না করলে তো আর টাকা পাওয়া যাবে না। একাজ করে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাওয়া যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সৈকত আলী জানান, মিন্টু খুব গরিব ঘরের সন্তান। তার বাবাও একজন দিনমজুর। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তেমন কাজকর্ম করতে পারেন না। মিন্টু সৎ ও মেধাবী ছেলে। লেখাপড়া করে বড় হওয়ার ইচ্ছে তার। এজন্য দিনমজুরি করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন