নন্দীগ্রামের ভোট শেষ, হেভিওয়েট লড়াইয়ে ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে কার? | Daily Chandni Bazar নন্দীগ্রামের ভোট শেষ, হেভিওয়েট লড়াইয়ে ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে কার? | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২ এপ্রিল, ২০২১ ১৪:২৭
নন্দীগ্রামের ভোট শেষ, হেভিওয়েট লড়াইয়ে ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে কার?
অনলাইন ডেস্ক

নন্দীগ্রামের ভোট শেষ, হেভিওয়েট লড়াইয়ে ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে কার?

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার ৩০টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ছিল বহুল আলোচিত নন্দীগ্রামের আসনটিও। সেখানে এবার মুখোমুখি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তারই একসময়ের সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারী। বিশ্লেষকদের একাংশের মত, নন্দীগ্রামে হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর লড়াইয়ে যিনি হারবেন, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারই হয়তো শেষ হয়ে যেতে পারে।

এই নন্দীগ্রামেই ১৪ বছর কৃষি জমি অধিগ্রহণ করে শিল্প কারখানা তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতালাভের পথ করে নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসনটিতে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী একসময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র শুভেন্দু, যিনি দল বদলে এবার বিজেপির হয়ে লড়ছেন।

কেমন হলো নন্দীগ্রামের ভোট?
বিবিসি বাংলার খবর অনুসারে, সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। নির্বাচনী ভোটকেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে লম্বা লাইন। ভোট দিতে নারী ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় নির্বাচন কমিশনের দেয়া হিসাব মতে, নন্দীগ্রামে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে।


বড় পরীক্ষা নন্দীগ্রামে
বিশ্লেষকরা বলছেন, ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে যে মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে, তা এই এলাকায় আগে কখনোই এত গুরুতর আকার ধারণ করেনি।

নন্দীগ্রামে দুটি ব্লক মিলিয়ে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা ২৬ শতাংশ। সেখানে হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী প্রচারণা চালিয়েছেন ধর্মীয় বিভাজনরেখা স্পষ্ট রেখে। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরোধিতাও ছিল তার প্রচারণা শিবিরের অন্যতম হাতিয়ার। বিশেষ করে, মমতার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে মুসলিম তোষণের অভিযোগ ছিল নন্দীগ্রামে বিজেপির প্রচারণার বড় কৌশল।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস তাদের প্রচারণায় এলাকার উন্নয়নের বিষয়টিতে জোর দেয়া এবং শুভেন্দু অধিকারীর দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানকে তার ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র একটা প্রতিমূর্তি হিসেবে তুলে ধরেছে।

কী বলছেন ভোটাররা?
নন্দীগ্রামের এক নারী ভোটার বিবিসি বাংলাকে বলেন, তৃণমূল সরকার এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছে। একারণে এবারের নির্বাচনে মমতাই জিতবেন বলে বিশ্বাস তার।

তবে আরেক ভোটারের ক্ষুব্ধ বক্তব্য, ‘এখন ভোটের জন্য নন্দীগ্রামে এসেছেন দিদি (মমতা)। গত ১০ বছরে তিনি কয়বার এসেছেন?

আরেকজন ভোটার বলেন, ‘কে জিতবে বলা মুশকিল। তবে মনে হয় শুভেন্দু বাবুই জিতবেন।’

শঙ্কার মধ্যেই শান্তিপূর্ণ ভোট
নন্দীগ্রামে ভোটের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছিল স্থানীয় প্রশান। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে সেখানে দুই হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আতঙ্কে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারাও। তবে সব সংশয় উড়িয়ে ভোট হয়েছে নির্বিঘ্নেই।

বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনায় ইট-পাথর নিক্ষেপ, বুথ জ্যাম করা এবং কয়েকটি এলাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেয়ার অভিযোগ ছাড়া বড়ধরনের কোন অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি।

একটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ করেন, তার সমর্থকদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সেখানে তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন। সেসময় ওই এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের ভিড় জমে যায় এবং বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে শেষপর্যন্ত উপস্থিত পুলিশ বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে এলাকা ছেড়ে যান মমতা।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন