
সবজিবিক্রেতা বাবার অভাবি সংসারে সচ্ছলতার জন্য ঢাকায় ধানমন্ডির একটি প্রতিষ্ঠানে স্টোরকিপার হিসেবে যোগদানের পাঁচ দিনের মাথায় চুরির অপবাদে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন গাইবান্ধার কিশোর আশরাফুল ইসলাম (১৬)। বুধবার (৭ মার্চ) ওই কিশোরকে ভর্তি করা হয় গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে। আঘাতের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নজরে আসে বিষয়টি।
হাসপাতালে নির্যাতনের রোমহর্ষক বর্ণনা দেন চিকিৎসাধীন কিশোর আশরাফুল ইসলাম। এ সময় বুক চাপড়িয়ে বিচার দাবি করেন আশরাফুল ইসলামের বাবা সবজি বিক্রেতা আব্দুল আজিজ।
নদীভাঙনে সর্বহারা সবজিবিক্রেতা আব্দুল আজিজ গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের মধ্য ফলিয়া গ্রামে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করেন।
জানা যায়, গত ৩১ মার্চ আশরাফুলকে ঢাকায় নিয়ে যান প্রতিবেশী রাকিব। পহেলা এপ্রিল ধানমন্ডিতে ‘কিডস ফ্যাশনশো’ নামে একটি দোকানে স্টোরকিপার পদে চাকরি হয় রাকিবের মাধ্যমে। আট হাজার টাকা চুরির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির আব্বাস রহিত ও কর্মচারী মিজান তাকে বেদম মারপিট করেন বলে অভিযোগ আশরাফুলের।
আঘাতের পর আঘাতে অনেক অনুনয় করেও রক্ষা পাননি ওই কিশোর।
অভিযুক্ত আমির আব্বাস রহিতকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
তবে মোবাইলে যোগাযোগ করলে মারপিটের কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত কর্মচারী মিজান।
তিনি বলেন, চুরির অপরাধে তাকে মারধর করা হয়েছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে মারপিট করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, আপনার কিছু করার থাকলে করেন।
ভুক্তভোগী আশরাফুল ইসলাম জানান, গত ৫ এপ্রিল সোমবার রাতে টানা দেড়ঘণ্টা নির্যাতনের পর তার স্বাক্ষর ও ভিডিও স্বীকারোক্তি নেয়া হয়। আশরাফুলের বাবার কাছ থেকে বিকাশে টাকা নেয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্লাস দিয়ে আঙুল চেপে ধরে কাঠের বাটাম আর হকিস্টিক দিয়ে দেড়ঘণ্টা পেটানোর পর শরীরে গরম পানি দেয়ার ভয় দেখিয়ে তার স্বীকারোক্তি নেয়া হয়।
বিষয়টি জানার পর গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবর রহমান ঘটনাস্থল যেহেতু ধানমন্ডি থানা এলাকায় তাই সেই থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন