বগুড়ায় করোনায় বৈশাখী ও ইফতারের উৎসব নেই | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় করোনায় বৈশাখী ও ইফতারের উৎসব নেই | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৫ এপ্রিল, ২০২১ ২০:১০
বগুড়ায় করোনায় বৈশাখী ও ইফতারের উৎসব নেই
এইচ আলিম

বগুড়ায় করোনায় বৈশাখী
ও ইফতারের উৎসব নেই

বগুড়ায় করোনায় পহেলা বৈশাখে বৈশাখী ও পহেলা রমজানে ইফতারের উৎসব ছিল না। বাংলা নববর্ষ বরণে বগুড়ায় কোন আয়োজন ছিল না। দুই একজন অনলাইনে বৈশাখ পালনের আয়োজন করে। আর কঠোর লক ডাউনের কারনে পহেলা রমজানে শহর ছিল ফাঁকা। তেমন লোকজন ছিল না। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। শহর নীরব থাকলেও শহরের ঘরে ঘরে ছিল রমজানের উৎসব।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার লকডাউন কার্যকর করতে বগুড়া শহরে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ সরকারী নির্দেশনা মেনে চলার আহবান জানান নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেটগণ। এছাড়া শহরের সাতমাথা, নবাববাড়ী সড়কে কাঁচাবাজার পরিদর্শন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয় বিক্রয়ের আহবান জানানো হয়েছে। শহরে তেমন কোন ভিড় ছিল না সাধারণ মানুষের। 
বুধবার বগুড়ার ঐতিহ্যবাহি ইফতারে অপরিহার্য সাদা দই ছিল আগেরমতই প্রিয়। কিন্তু লক ডাউনের কারণে বিক্রি হয়েছে কম। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে নানা পদের ইফতার সামগ্রীও খুব একটা দেখা যায়নি। বিগত দিনে প্রথম রমজানে রোজাদারদের কেনাকাটা, ইফতার সামগ্রী কেনার হিড়িক ছিল সেটি এবার দেখা যায়নি। ইফতার সামগ্রীতেও খুব একটা বাহার ছিল না। বগুড়ায় মাহে রমজানে বহুযুগ ধরেই ইফতারে সাদা দই (টকদই) ছিল প্রচলিত খাবার। সাদা দই শরীরকে ঠান্ডা ও হজমে কাজ করে বলে বগুড়াসহ আশপাশের জেলায় সাদা দই ইফতার সামগ্রীতে ছিল অপরিহার্য। এর সাথে মুড়ি, বুন্দিয়া, ছোলা, পিয়াজু, ঝুড়ি, চানাচুর, খেজুর, হালিম, জিলাপি, মিষ্টি, কলা, মাল্টা, কমলা, আপেল, ডাব, মুরগীর গ্রিল, খাসি ও গরুর মাংসের তৈরী বিভিন্ন প্রকার কাবাব, বেল, মিশ্রিত শরবত বগুড়ার ইফতার সামগ্রীতে ছিল অপরিহার্য। প্রায় শত বছর ধরে এই জেলায় ইফতার সামগ্রী ছিল রোজাদারদের জন্য প্রথম খাবার। 
তবে বগুড়ায় লক ডাউনের কারণে প্রথম রোজার আগের তিনদিনই কেনাকাটা করেন সাধারণ মানুষ। বুধবার পর্যন্ত মুড়ি বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। খেজুর বিক্রি হয়েছে সাধারণ মানের ১২০ টাকা আর কিছুটা ভাল মানের খেজুর বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে। কলা বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা হালির মধ্যে। লেবু ২৫ থেকে ৩০ টাকা হালি, বেল প্রতি পিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে। ৮০ টাকা দামের সাদা দই বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা করে। 
২০২০ সালে প্রথমবার করোনা ভাইরাস হানা দিলে সেবারও এসব ইফতারের বাহার ছিল না। এবার ২০২১ সালেও ইফতারে কোন বাহার নেই। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে জেলার প্রধান ইফতার বাজারে বিক্রেতারা ইফতার সামগ্রী নিয়ে বসেন নি। দুই একজন বসার চেষ্টা করলেও প্রশাসন থেকে বিধি নিষেধ থাকায় তা বসতে পারেনি। বেশিরভাগ পরিবার ঘরে বসেই গৃহিনীর হাতের তৈরী ইফতার সামগ্রী দিয়ে ইফতার সেরেছেন।
বগুড়া শহরের বড়গোলা এলাকার কয়েকজন জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছর বিভিন্ন নামের আর স্বাদের ইফতার সামগ্রী পাওয়া যায়নি। এবারো তেমনি হলো। বৈশাখ মাসের কোন অনুষ্ঠান ছিল না। কাউকে বৈশাখের সাজেও দেখা যায়নি। শিশুরা পর্যন্ত ঘরে ছিল। এলাকায় সড়কগুলো ফাঁকা ছিল। কাঁচা বাজার খোলা থাকলেও বিকালের পরে বন্ধ হয়ে যায়।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার /  সাজ্জাদ হোসাইন