![logo](https://dailychandnibazar.com.bd/assets/importent_images/logo.png)
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর শহীদ ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মুনসুর আলী পরিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরিবারের একটি বিশ^স্ত ও ভরসার নাম। যারা হাজারো ত্যাগ ও প্রতিকূলতার মাঝেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে পিছুপা হয়নি কখনোই। কিন্তু হঠাৎ করেই সম্প্রতি ১/১১ এর উল্টোরথে চলা কিছু রাজনৈতিক নানা গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লোটার উৎসবে মেতে উঠেছে এই পরিবারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কাজিপুরের সাংসদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিভাজনের কাল্পনিক তথ্যও তারা প্রচার করছেন। নেতারা বলছেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা লটুতে কিছু দুষ্কৃতিকারীরা এমন গুজব রটাচ্ছে যা নিয়ে বর্তমানে বেশ আলোচিত হয়ে আছে কাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গণ।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুনসুর আলীর সন্তান মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১/১১ তে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্যাতনে অসুস্থ হওয়ার কারণে ২০০৮ সালে এখানে সাংসদ হন তার ছেলে তানভীর শাকিল জয়। এই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়েই মূলত কাজিপুরের রাজনীতির নতুন দিক উন্মোচন হয়। তখন অনেকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই দল থেকে তানভীর শাকিলের নাম এককভাবে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। এতে বিরোধী অবস্থানে কিছু নেতাকর্মী প্রকাশ্যে চলে আসেন। তারাই কার্যত অবৈধভাবে ফায়দা লুটতে সাংসদ প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় ও কাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজীর মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন মর্মে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নাসিম সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সাংসদ হন। গত বছরের ১৩ জুন মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। এ কারণে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে ফের সাংসদ হন তার ছেলে তানভীর শাকিল জয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বর্তমানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কাজিপুরে রাজনৈতিক সৌহার্দ্যরে মধ্য দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে যাচ্ছে। সাংসদের অনুপস্থিতিতে কাজিপুরে তার প্রতিনিধিত্ব করেন খলিল। তিনি সাংসদ নাসিমেরও প্রতিনিধি ছিলেন। মূলত ক্যাপ্টেন পরিবারের কাছে আ. লীগ নেতা খলিল অত্যন্ত বিশ্বস্ত রাজনৈতিক হিসেবে বরাবরই পরিচিত অথচ তাকে ও জয়কে ঘিরে কুৎসা রটাচ্ছে রাজনীতির লেবাসে দুর্নীতিবাজ বহিস্কৃত নেতারা মর্মে ক্ষোভ ও দু:খ প্রকাশ করেন দলের নেতৃস্থানীয় নেতারা।
এমন গুজব কাজীপুরের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করা হচ্ছে বলে মনে করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন। কাজিপুরের রাজনীতিতে সাংসদ জয়-খলিল আলাদা নয় বলে মন্তব্য করেছেন কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমীন। এছাড়াও ১৯৭৬ সাল থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত কাজিপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু মানেই ক্যাপ্টেন মুনসুর আহমেদ। বাংলাদেশ মানেই শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা মানেই মোহাম্মদ নাসিম। সেই অর্থে জয়ও এখন জাতীয় রাজনীতির অংশ। খলিল জয়ের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাদের সম্পর্ক অভিন্ন। ক্যাপ্টেন পরিবার শুধু রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়, এটি কাজিপুরবাসীর জন্য একটি অনুভূতির জায়গা।
নাসিমপুত্র সাংসদ জয়ের নেতৃত্ব ও খলিল সিরাজীর দক্ষতার প্রশংসা করে কাজীপুরের রাজনীতি ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ইতিবাচক ধারাবাহিকতা কামনা করেছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের অনেকেই। তারা বলেন, সাংসদ মোহাম্মদ নাসিম মারা যাওয়ার পর বিরোধী দলীয় অপশক্তির সাথে যোগসাজস করে একটি গোষ্ঠী কাজীপুরের রাজনীতিতে বিভাজন করার স্বপ্ন দেখছে। তারা নানা গুজব ছড়িয়ে মূলত সাংসদ জয় ও ক্যাপ্টেন পরিবারের দীর্ঘদিনের বিশ^স্ত ব্যক্তি খলিল সিরাজীর মাঝে সম্পর্কের ফাটল ধরাতে চাইছেন তা দিবাস্বপ্নের মতো রয়ে যাবে। অচিরেই এই ষড়যন্ত্রকারী চক্রকে প্রতিহত করা হবে মর্মেও হুশিয়ারী দেন তারা। কাজীপুরে প্রত্যক্ষ ও মুঠোফোনে নেওয়া পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকারে এমন কথা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ মোসলেম উদ্দিন সরকার, কাজীপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক দ্বীন মো. বাচ্চু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম, নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন মাষ্টার, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুর রহিম সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহম্মেদসহ অনেকেই।
বর্তমানের এমন পরিস্থিতি বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর বলেন, কাজিপুরের কিছু দুর্নীতিবাজগোষ্ঠী আমাকে নিয়ে রাজনীতি করছে না, তারা ক্যাপ্টেন পরিবারের ক্ষতি করতে চান। কৌশলে তারা সুবিধা নিতে চান। কাজীপুরে আ. লীগ অত্যন্ত সুসংগঠিত। এই প্রতিহিংসায় যারা জ্বলছেন তারাই গুজব রটাচ্ছে এবং মিথ্যাচার করছেন। নাসিমের দুর্গ ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য তারা রাজনৈতিকভাবে পায়তারা করছেন।
এ প্রসঙ্গে সাংসদ প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় বলেন, খলিল ও আমাকে নিয়ে কল্পনাপ্রসূত গল্প তৈরি করে আমাদের রাজনৈতিক সৌহার্দ নষ্ট করতে চায় কাজিপুরের কয়েকজন জনবিচ্ছিন্ন নেতা। ব্যক্তিস্বার্থের জন্যে তারা কাজিপুরের রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। তিনি আরো বলেন এমন অনেকের ষড়যন্ত্র তিনি কাছ থেকে দেখেছে তারপরও দলের স্বার্থে তাদের কাছে রেখেছে। দিনশেষে ঐক্যবদ্ধভাবেই উন্নয়নের পথে যেতে চান তিনি মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন