![logo](https://dailychandnibazar.com.bd/assets/importent_images/logo.png)
চলছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ অন্যদিকে নাই বালু মহল। এই সুযোগ কাজে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় যে যার ইচ্ছে মত অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। কোথাও ভূগর্ভস্থ বালু কোথাও নদীর তীরের চর কেটে বালু তোলা হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসন একের পর এক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এক বছরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রায় ৭০টির বেশি বড় ধরণের অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
গত ২৮ জুন সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজির হোসেনের নেতৃত্বে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে বড় ধরণের অভিযান পরিচালিত হয়। পৌর এলাকার বোয়ালিয়া নামক স্থানে করতোয়া নদীর তীরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে আটক করা হয়। বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজার, ড্রামট্রাক ও সরঞ্জামাদি আটক করা হয়। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আটক ব্যক্তিদের দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা
করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই থেকে উপজেলায় বড় ধরণের প্রায় ৭০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এই সব অভিযানে প্রায় ৪৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ছয় জন ব্যক্তিকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও গত ২৬ মে মাসে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে ছয়টি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ছয় মামলায় ৩৪ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। বিবাদীর মাঝে বর্তমানে ১০ জন জেল হাজতে আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার এক বালু ব্যবসায়ী জানায়, গোবিন্দগঞ্জে কোন বালু মহাল নাই। সিরাজগঞ্জে বালু মহালে বালু প্রতি সেফটি ১৯ টাকা এবং বগুড়ার বালু মহালে বালুর সেফটি ১৬ টাকা। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জে প্রতি সেফটি বালু ৭৫ পয়সা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ এক টাকা সেফটিতে বিক্রি হয়। কম দামে বালু পাওয়ায় বালু ব্যবহারকারীরা উপজেলার লোকজনকে প্রলুদ্ধ করে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করাচ্ছে। তিনি আরও জানান, ঢাকা রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণসহ আশেপাশে আরও বড় বড় উন্নয়ন কাজ চলছে। দামে কম হওয়ায় উপজেলা থেকেই এসব প্রকল্পের বালু নিচ্ছে ঠিকাদাররা।
বছরব্যাপী অভিযানে নেতৃত্বদানকারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজির হোসেন জানান, এক বছরে ৭০টির অধিক বড় ধরণের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে জরিমানা ও জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অসংখ্য অভিযানে অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজার, পাইপ ও সরঞ্জামাদি ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ জানান, গড়ে প্রতি দুই দিনে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কমপক্ষে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। সহকারী কমিশনারের পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ের ভূমি অফিসের তশীলদাররাও অভিযানে নেতৃত্ব প্রদান করে অবৈধ বালু উত্তোরন বন্ধে কাজ করছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় বালু মহল করার সরকারি সিন্ধান্ত আছে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, অচিরেই উপজেলায় একটি বালু মহল গড়ে তোলা হবে। এজন্য সম্ভাব্য জায়গা নির্ধারণের কাজ চলছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন