জর্ডানে ‘প্রাসাদ ষড়যন্ত্র’: দুই সাবেক কর্মকর্তার ১৫ বছরের জেল | Daily Chandni Bazar জর্ডানে ‘প্রাসাদ ষড়যন্ত্র’: দুই সাবেক কর্মকর্তার ১৫ বছরের জেল | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১২ জুলাই, ২০২১ ১৬:০১
জর্ডানে ‘প্রাসাদ ষড়যন্ত্র’: দুই সাবেক কর্মকর্তার ১৫ বছরের জেল
অনলাইন ডেস্ক

জর্ডানে ‘প্রাসাদ ষড়যন্ত্র’: দুই সাবেক কর্মকর্তার ১৫ বছরের জেল

জর্ডানে রাজশাসন অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক দুই কর্মকর্তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং উসকানির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সোমবার এ রায় দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবর অনুসারে, সাজাপ্রাপ্তরা হলেন রাজপরিবারের সদস্য শরিফ হাসান বিন জায়েদ এবং বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহর সাবেক শীর্ষ সহযোগী বাসেম আওয়াদাল্লাহ।

আদালত বলেছেন, উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণে নিশ্চিত হয়েছে যে, এ দুই ব্যক্তি সিংহাসনের সাবেক উত্তরাধিকারী যুবরাজ হামজাকে বিকল্প বাদশাহ হিসেবে উপস্থাপনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থেকে রাজপরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন।

জর্ডানের অর্থনৈতিক সংস্কারের পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করা সাবেক অর্থমন্ত্রী আওদাল্লাহর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে জনসাধারণের নিরাপত্তায় হুমকি তৈরি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের বীজ বপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অবশ্য তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং বলেছেন, এ ঘটনায় তার বিন্দুমাত্র যোগসূত্র নেই।

এ দুইজনের বিরুদ্ধে বিদেশি সহায়তা খোঁজারও অভিযোগ আনা হয়েছে, যা তারা অস্বীকার করেছেন। শরিফের এক আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

গত ২১ জুন থেকে আওয়াদাল্লাহ ও শরিফের বিরুদ্ধে আদালতে শুনানি চলছিল। তাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

গত এপ্রিলে জর্ডানের যুবরাজ প্রিন্স হামজা বিন হুসেইন এক ভিডিওবার্তায় তাকে গৃহবন্দি করার অভিযোগ করেন। এর পরপরই দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি ঘোষণা দেন, প্রিন্স হামজা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে জড়িত।

এক সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্স হামজার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে আয়মান সাফাদি বলেন, হামজা ও আরও কয়েকজন বিদেশি একটি দলের সঙ্গে মিলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছিলেন।

তিনি বলেন, প্রিন্স হামজা সরকারের বিরুদ্ধে উপজাতীয় নেতাদের দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন। এ ব্যাপারে অনেক দিন ধরেই তদন্ত চলছিল এবং বিষয়টি আদালতে তোলা হবে।

সেসময় জানা গিয়েছিল, প্রিন্স হামজাকে গৃহবন্দি করার পাশাপাশি অন্তত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে- যার মধ্যে বাদশাহ আবদুল্লাহর একজন উপদেষ্টা এবং রাজপরিবারের একজন সদস্য রয়েছেন। উচ্চপর্যায়ের এই লোকদের গ্রেফতার করাকে ‘অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সঙ্গে সম্পর্কিত’ বলে উল্লেখ করা হয়।

হামজা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন না। তবে আইনজীবীর মাধ্যমে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক ভিডিওতে নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অদক্ষতা ও হয়রানির অভিযোগ আনেন তিনি।

রেকর্ড করা ভিডিওটিতে প্রিন্স হামজা বলেন, জর্ডানের সেনাপ্রধান তাকে জানিয়েছেন যে, তিনি বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন না এবং লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না। কারণ সরকার ও বাদশাহর সমালোচনা করা হয়েছে এমন কিছু সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন।

যুবরাজ বলেন, গত ১৫-২০ বছরে জর্ডানের প্রশাসন যেভাবে ভেঙে পড়েছে, সরকার কাঠামোয় যে অদক্ষতা ও দুর্নীতি দেখা গেছে তার জন্য আমি দায়ী নই। জনগণ যে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, তার জন্যেওও আমি দায়ী নই।

তার এই বক্তব্যের জেরে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয় জর্ডানে। পরে অবশ্য বাদশাহর আনুগত্য স্বীকারের মাধ্যমে সাজা এড়ান প্রিন্স হামজা।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন