বগুড়ায় চাঁদবাজির অভিযোগে ফেঁসে গেলেন ২ ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় চাঁদবাজির অভিযোগে ফেঁসে গেলেন ২ ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০২১ ২১:০৫
বগুড়ায় চাঁদবাজির অভিযোগে ফেঁসে গেলেন ২ ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা
জেলা পুলিশ সুপারের জিরো টলারেন্স ভূমিকা
ষ্টাফ রিপোর্টার

বগুড়ায় চাঁদবাজির অভিযোগে ফেঁসে
গেলেন ২ ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা

বগুড়ায় এসপি’র নাম ব্যবহার করে ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ২ পুলিশ কর্মকর্তা ফেঁসে গেছেন। চাঁদাবাজির ঘটনা জেলা পুলিশ সুপারের নজরে আসার পরপরই প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে ১জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে অভিযুক্ত ২ জনকেই রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) এ শাস্তিমূলক বদলী করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ২ পুলিশ সদস্যরা হলেন, ডিবি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিন ও এসআই শওকত আলম যাদের মাঝে এসআই শওকত কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে রবিবার ইতিমধ্যেই এই ২ জনকে জেলা থেকে ছাড়পত্রও প্রদান করা হয়েছে মর্মে মুঠোফোনে নিজেই নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার)।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এ বছরের ২৭মে পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মাস্টার বিড়ি ফ্যাক্টরিতে যান। সেখানে বিপুল পরিমাণ জাল ব্যান্ডরোল মজুদ আছে বলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক হেলালকে ডেকে আনেন তারা। তবে হেলাল সেগুলো বৈধ দাবি করেছিল বলে জানা যায়। কিন্তু ডিবি পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা ব্যান্ডরোলসহ হেলালকে আটক করতে চান। এক পর্যায়ে ডিবির ওই ২ সদস্যরা জানান জেলা পুলিশ সুপারের তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান হয়েছে তাই স্যারকে টাকা দিতে হবে। এই কথা শুনে হেলাল ২৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়।  যার ৯  লাখ টাকা ওই দিন রাতে ওই দুই কর্মকর্তাকে হেলাল দিয়ে দেন। বাকি ১৬ লাখ টাকা এক সপ্তাহ পর দেওয়ার কথা থাকলেও ফ্যাক্টরির মালিক নানারকম তালবাহান শুরু করেন।

এদিকে সম্প্রতি পুলিশ সুপারের বদলির আদেশ হলে ইন্সপেক্টর তুহিন ও এসআই শওকত হেলালের ওপর টাকার জন্যে চাপ দিতে থাকেন বলে শোনা যায়। এক পর্যায়ে  হেলাল তার এক পরিচিত জনের মাধ্যমে ১৩ জুলাই বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানান। পুলিশ সুপার বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক হেলালকে ডেকে আনেন। বিস্তারিত সব জেনে হেলালের থেকে একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। 

রবিবার মুঠোফোনে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) এর সাথে এ প্রসঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, অভিযোগ প্রাপ্তির পরপরই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী কে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জ্জী কে নিয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত ঐ ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এসপি আশরাফ আরো বলেন, ব্যক্তির দায় কখনো প্রতিষ্ঠান নেবেনা।

বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত গর্বিত ও সম্মানজনক একটি বিভাগ তাই দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালনের সময় এমন অভিযোগ যদি শেষ পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয় তাহলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা মর্মে জিরো টলারেন্সভাবে কঠোর হুশিয়ারী দেন এই কর্মকর্তা।এদিকে অভিযুক্ত ২ পুলিশ সদস্য ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিন ও এসআই শওকতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, 'অভিযোগ হয়েছে এটা সত্য তবে ঘটনাটি সত্য নয়। তদন্ত চলছে তাই শেষ পর্যন্ত অবশ্যই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে মর্মে জানান তারা। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন