মান্দায় স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে গৃহবধূ | Daily Chandni Bazar মান্দায় স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে গৃহবধূ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২২:২৭
মান্দায় স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে গৃহবধূ
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি :

মান্দায় স্বামীর নির্যাতন থেকে 
বাঁচতে আত্মগোপনে গৃহবধূ

স্বামী মাদকাসক্ত। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় প্রায়ই নির্যাতন করেন। দুসপ্তাহ আগে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেন। সেই ভাঙা হাতে এখনও ব্যান্ডেজ রয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে আবারো মারপিট করা হয়। এবার হুমকি দেন একটি পা ভেঙে দেওয়ার। সেই আতঙ্কে দুই শিশু সন্তান মনি (১০) ও মুক্তাকে (৬) নিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই শিশুসন্তান নিয়ে থানার হাজির হয়ে এভাবেই নির্যাতনের বর্ণনা দেন শাহিনুর বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূ। তিনি উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের বান্দাইপুর গ্রামের মিজানুর রহমান মিলনের স্ত্রী ও একই ইউনিয়নের কুকরাইল গ্রামের মৃত ফহিম উদ্দিন সরদারের মেয়ে।
গৃহবধূ শাহিনুর বেগম জানান, স্বামী মিলন কখনও শ্রমিকের কাজ আবার কখনও ভ্যান চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। তাঁর উপাজর্নের প্রায় সব টাকায় মাদক সেবনের পেছনে উড়িয়ে দিতেন। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তাঁকে প্রায়ই মারপিট করা হয়। দুই শিশুসন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সব নির্যাতন সহ্য করতেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত দুসপ্তাহ আগে সামান্য বিষয় নিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাঁর বাম হাত ভেঙে দেওয়া হয়। চিকিৎসায় এখনও সুস্থ হতে পারেননি। এ অবস্থায় পা ভেঙে দেওয়ার হুমকিতে দুই শিশুসন্তান নিয়ে তিনি আত্মগোপন করেন। 
পুলিশ তাঁকে খোঁজাখুঁজি করছে এমন সংবাদের সন্তানদের নিয়ে শুক্রবার সকালে থানায় হাজির হন। এসময় তাঁর ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বামী মিলনের শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
গৃহবধূ শাহিনুরের ভাই ইমাজ উদ্দিন সরদার বলেন, ‘প্রায় ১৪ বছর আগে বোন শাহিনুর বেগমকে পারিবারিকভাবে মিলনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। তখন মিলন মাদকসেবন করত না। পরবর্তীতে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। এরপর শুরু হয় বোন শাহিনুরের ওপর নির্যাতন। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। তবুও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সম্প্রতি লাঠি দিয়ে তাঁর একটি হাত ভেঙে দেওয়া হয়। তিনিও ভগ্নিপতি মিলনের শাস্তির দাবি করেন।
গৃহবধূর স্বামী মিজানুর রহমান মিলন বলেন, গত রোববার তিনি শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে স্ত্রী ও সন্তানদের কাউকেই পাননি। স্ত্রী-সন্তান নিরুদ্দেশ হওয়ার ঘটনায় মান্দা থানায় অভিযোগ করেন। স্ত্রীকে নির্যাতনের কথা অকপটে স্বীকার করে তিনি বলেন, সংসারে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এগুলো হয়েই থাকে। 
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ‘থানায় হাজির হওয়ার পর গৃহবধূর বাবার বাড়িতে সংবাদ পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূ চাইলে তাঁকে সবধরণের আইনি সহয়তা দেওয়া হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন