
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আবাসিক হোটেলে মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার এসআই জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়া তার প্রত্যক্ষদর্শী মেয়ের জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত।
খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাসান আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তারা হোটেলটি পরিদর্শন ও এর মালিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে খালিশপুর জোনের সহকারী কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, তিনি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন। ২/১ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. অঞ্জন কুমার চক্রবর্তী জানান, ওই নারীকে ওসিসিতে ভর্তির পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে মানসিক কাউন্সিল দেওয়া হয়। তার শরীর ও পোশাক থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহসহ ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে এসআই জাহাঙ্গীরকে খুমেক হাসপাতালে নেয়া হবে। সেখানে তার শরীরের বিভিন্ন আলামত ও ডিএনএ নেয়া হবে।
হোটেলের কর্মচারী গোলাম মোস্তফা জানান, এসআই জাহাঙ্গীর মাঝেমধ্যে এই হোটেলে আসতেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি তাকে সঙ্গে নিয়ে মা-মেয়ে যে কক্ষে ছিলেন ওই কক্ষের দরজায় গিয়ে নক করেন। তারা দরজা খুলে দেওয়ার পর তাকে (হোটেল কর্মচারীকে) মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন এসআই। এরপর কক্ষের ভেতরে কী ঘটেছে তা তিনি দেখেননি। তবে ওই নারীর চিৎকারে হোটেলের লোকজন মেইন গেটে তালা লাগিয়ে দেয়।
বাগেরহাটের ওই নারী ভাগ্নেকে নিয়ে তার মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর জন্য মঙ্গলবার খুলনায় আসেন। রাতে তারা একটি হোটেলে ওঠেন। রাত আড়াইটায় এসআই জাহাঙ্গীর মা-মেয়ের কক্ষে গিয়ে মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণ করেন। এরপর হোটেলের কর্মচারীরা তাকে আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে ওই নারী বাদী হয়ে খুলনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এসআই জাহাঙ্গীর বর্তমানে খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন