
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় জমির মালিকানা দ্বন্দ্বে নিহত দাতার মৃত্যুতে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে গুটি কয়েক লোকের উপস্থিতিতে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধাক্কা-ধাক্কির ফলে ধারালো কোদালের আঘাতে আহত হয় উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউপির কুমিড়াডাঙ্গা গ্রামের দুদু ফকির। পরে ১৩ জানুয়ারি মধ্য রাতে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরের দিন ১৪ জানুয়ারি পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, দুদু ফকিরের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী এক পুত্র সন্তান রেখে মারা যায়। দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানদের নিয়ে সংসার তার। একসময় অতিগোপনে নাবালক সন্তান ও স্ত্রীর নামে কিছু জমি লিখে দেন তিনি। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালের দিকে অর্থের প্রয়োজনে সেই জমিই পাশের জগদীশপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের নিকট বিক্রি করলে তা সিরাজুল ইসলাম নিজ স্ত্রী-সন্তানদের নামে কবলা দলিল করেন। সে সময় থেকেই জমি দখলে নিয়ে সিরাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক গংরা ভোগ করে আসছিল। এর মাঝে মাঠ পর্চা ও খাজনা খারিজও সম্পন্ন করে নেন তারা। দীর্ঘ ২৫ বছর পর ছেলে সাবালক হয়ে জানতে পারেন ওই জমি তার বাবা তাদের আগে দলিল করে দিয়েছে। এটা জানার পর হঠাৎ করেই তারা জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় স্থানীয় শালিস বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও দুদু ফকির কৌশলে তা এড়িয়ে যান। এর মাঝেই দুদু মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ছেলে ও বর্তমান স্ত্রী-সন্তানদের সাথে জমি নিয়ে পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়।
এদিকে ৭ জানুয়ারির ঘটনা প্রসঙ্গে আব্দুর রাজ্জাকের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, গত ২৫ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে তারা জমি ভোগ দখল করে আসছে। কোনদিন জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল না। আ. রাজ্জাকরা ধারাবাহিকতায় ইরি জমিতে সেচ ও চাষ করতে গেলে সে কাজে হঠাৎ করেই দুদু ফকির তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাঁধা দিতে আসে। সেসময় অসাবধানতাবশত পরে গিয়ে আহত হয় বৃদ্ধ দুদু ফকির। সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। যা মিথ্যাভাবে হত্যা মামলায় রূপ দিয়ে বয়োবৃদ্ধদের অযোক্তিক হুকুমের আসামি সহ অন্যদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন ফেরারি আসামির পরিবার ও এলাকাবাসী। তাদের দাবি মামলাটি সঠিক-সুষ্ঠুভাবে অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন
।দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন