নির্বাচনের পর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ভেঙে এলাকায় দাপট ! | Daily Chandni Bazar নির্বাচনের পর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ভেঙে এলাকায় দাপট ! | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারী, ২০২২ ২২:০৪
নির্বাচনের পর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ভেঙে এলাকায় দাপট !
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রুপা
দুপচাঁচিয়া(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

নির্বাচনের পর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ভেঙে এলাকায় দাপট !

ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রুপা গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের(ডিবি) সদস্যরা তাঁকে ঢাকা থেকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীনে ‘অডিটর’ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এ খবর বের হওয়ার পর এলাকায় টক অব দ্যা উপজেলায় পরিনত হয়েছে।
মাহবুবা নাসরিন রুপা জেলা আওয়ামীলীগ ও উপজেলা আওয়ামীগের সক্রিয় একজন সদস্য। তিনি উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার ভুঁইপুর গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। এঘটনার পর তাঁর এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাঁরা বাবা আতাউর রহমান ঢাকাতেই দীর্ঘদিন যাবৎ বেসরকারি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। অখ্যাত পরিবারের এ মেয়ে  প্রাথমিক শিক্ষা নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেষ করে বাবার ঢাকায় অবস্থনের সুবাদে তিনি ঢাকায় মাধ্যমিক ও কলেজে পড়াশুনা করেন। গত ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি হঠাৎ করেই ঢাকা থেকে দুপচাঁচিয়ায় এসে ১৪দল মনোনীত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে নামেন। পরে গত ২০১৯ সালের মার্চ মাসে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হওয়ার পর এলাকায় তাঁর পরিচিতি প্রকাশ পায়। ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক পরিচয়ে তিনি কেন্দ্রীয় আ’লীগের আশির্বাদ নিয়ে নির্বাচনে মাঠে নামেন। সরকারি দলের পরিচয় দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকজন নারী প্রার্থীকে ডিঙ্গিয়ে তিনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি নির্বাচিত হবার কিছু দিনের মধ্যেই তাঁর বাবা মারা যান।  তার পর শুরু হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের নেত্রী হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে তাঁর দাপট। নির্বাচনে জিতে শপথ গ্রহনের পর উপজেলা পরিষদের প্রথম মিটিং এ তিনি আ’লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ইশারায় উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ভুঁইপুর গ্রামে না থেকে তাঁর বড় বাবা(চাচা) দেলোয়ার হোসেনের গোবিন্দপুরের পালিমহেশপুর গ্রামে থাকতেন। বড় বাবার বাড়িতে থেকেই তিনি আপন ভাই রকিবুল হাসান রকিকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও অপরাধী কর্মকান্ড চালাতেন। আওয়ামীলীগের কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুপা আপার হস্তক্ষেপেই তখন হাইব্রিড নেতাদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি করা হয়েছে। 
রূপার বড় বাবা(চাচা) সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, তার ভাতিজির নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়াশুনার সময় ঢাকার জিরানী বাজার এলাকায় একজনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বাবা-মা না থাকায় এবং ছোট বোন শিউলী স্বামীর বাড়িতে এবং ছোট ভাই রকি ঢাকায় লেখাপড়ার কারণে মাঝে মধ্যেই রূপা সে আমার বাসায় অবস্থান করতো। তার বিষয়ে খারাপ কোনো কিছুই আমি আগে শুনি নাই।  
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিনুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, প্রাথমিক কমিটির সদস্য পদে রুপার নাম ছিল কিন্তু চুড়ান্ত কমিটিতে তাঁর কোনো সদস্য পদ নেই। তিনি আরও বলেন, অপরাধ যেই করুক না কেন দল কোনো দায়িত্ব নিবে না।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন