গোবিন্দগঞ্জে হরিরামপুর বালিকা বিদ্যালয়ের অফিসের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তছনছ সহ চুরির অভিযোগ | Daily Chandni Bazar গোবিন্দগঞ্জে হরিরামপুর বালিকা বিদ্যালয়ের অফিসের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তছনছ সহ চুরির অভিযোগ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ০০:১৮
গোবিন্দগঞ্জে হরিরামপুর বালিকা বিদ্যালয়ের অফিসের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তছনছ সহ চুরির অভিযোগ
ষ্টাফ রিপোর্টার

গোবিন্দগঞ্জে হরিরামপুর বালিকা বিদ্যালয়ের অফিসের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তছনছ সহ চুরির অভিযোগ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং স্ত্রীকে প্রধান শিক্ষক করতে না পারায় সাবেক প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার হরিরামপুর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তছনছ সহ নিয়ে যান সাবেক প্রধান শিক্ষক বাচ্ছা মিয়া ও তার স্ত্রী শিক্ষক মাকছুদা বেগম। এমপির ডিও লেটার নিয়ে এ বিদ্যালয়ের সভাপতি হতে না পারা ও নিজ স্ত্রী মাকছুদা বেগম প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাচ্ছা মিয়া এ ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ও শিক্ষক-কর্মচারীরা। হাইকোর্টের নিষিধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তছনছ ও নিয়ে যাওয়ার এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় ৭ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বাচ্ছা মিয়া তার সঙ্গীয় অভিযুক্তদের সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকেন। পরে বিভিন্ন আলমিরা ও ড্রয়ার থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তছনছ করে বিদ্যালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করতে বেশ কিছু দুঃষ্প্রাপ্য ফাইলপত্র সঙ্গে নিয়ে যান। তারা প্রায় ৪ ঘণ্টা অফিস কক্ষে অবস্থান করে বের হয়ে যাওয়ার সময় অফিস ও প্রধান গেটে নিজেদের তালায় তালাবদ্ধ করে রেখে গেছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের নভেম্বরে বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এর আগে কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নেয়া হয়। এসময় স্থানীয় সাংসদ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে বাচ্ছা মিয়া ও মোফাজ্জল হোসেনকে ডিও লেটার দেন। এ ঘটনায় মহামান্য হাইকোর্টে মামলা দায়ের হলে নিয়মিত কমিটি গঠন স্থগিত হয়। আদালতের আদেশে আগের ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার আদেশ দেয়। সে আদেশেই আজও বিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। 
তিনি আরও জানান, অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে শরিফুল ইসলামকে নিয়ে দ্বন্দ্বে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন বাচ্ছা মিয়ার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা মাকছুদা বেগম। এর ফলে সবশেষ ১৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে (২৭১৮/২০২১) এক শুনানিতে প্রধান শিক্ষক পদে শরিফুল ইসলামকে বহাল করে ট্যাটাস্কো আদেশ প্রদান করে। এ রায়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে সহকারী শিক্ষিকা মাকছুদা বেগমের স্বামী সাবেক প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি পদে এমপির ডিও লেটার নেয়া বাচ্ছা মিয়া সরকার বিদ্যালয়টির অপূরণীয় ক্ষতিসাধনে এ ঘটনা ঘটান। 
এ বিষয়ে বাচ্ছা মিয়া ও শিক্ষিকা মাকছুদা বেগমের সাথে তাদের বাড়িতে গিয়ে ও ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।
প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র তছনছসহ চুরি করে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীরাা। তারা জানান, আমাদের নিয়োগ, মূল সনদপত্র ও এমপিও সংক্রান্ত মূল্যবান কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিহিংসাবশত ওই কাগজপত্র চুরি হলে বা নষ্ট হলে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এমন ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারী ও এলাকাবাসী।
এজাহার জমার পর গোবিন্দগঞ্জ থানা থেকে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করা হয়। তদন্তে প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এস আই আল মামুন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ মামলাটি রেকর্ড করেনি।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন