শেরপুরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর ঢল | Daily Chandni Bazar শেরপুরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর ঢল | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ২৩:৩২
শেরপুরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর ঢল
শুভ কুন্ডু, শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

শেরপুরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর ঢল

অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভের আশায় বগুড়ার শেরপুরের মা ভবানীর মন্দিরে উদযাপিত হলো মাঘী পূর্ণিমা। দিনটিকে ঘিরে সকাল থেকেই হাজার হাজার নারী পুরুষ পূণ্য লাভের আশায় মন্দিরস্থলে সমবেত হন এবং শাঁখারী পুকুরে পূণ্যস্নান করেন।

বুধবার (১৬ফেব্রুয়ারী) দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম ঐতিহাসিক এ মন্দিরস্থলে বসেছিল দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পূণ্যার্থীদের মিলনমেলা।

মা ভবানীপুর মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক অপূর্ব চক্রবর্ত্তী জানান, প্রতিবার সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ ভারত, নেপাল, ভুটান থেকেও ভক্তরা আসতেন। করোনা মহামারির বিধিনিষেধের কারণে এবার অনেক পূণ্যার্থীরা আসতে পারেননি। এ উৎসবে প্রতিবারই প্রায় লক্ষাধিক দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।

প্রতিবছর মাঘ মাসে পূর্ণিমার চাঁদের মাঘী পূর্ণিমার পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী এ পূণ্যস্থানে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভ হয়। আর সেই আশায় হাজার হাজার ভক্ত নর-নারী ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখারী পুকুরে স্নান করেন। সেইসঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রতি প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
 
মঙ্গলবার (১৫ফেব্রুয়ারী) রাত থেকেই তিথি অনুযায়ী মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমার উৎসবে যোগ দিতে পূণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। এজন্য অসংখ্য দর্শনার্থী মন্দির এলাকা ও আত্নীয়স্বজনের বাসায় রাত্রী যাপন করেন। যুগ যুগ আগে থেকেই এই ধর্মীয় তিথি উৎসব পালন হয়ে আসছে। প্রতিবছরই এ উৎসবে প্রায় অর্ধলাখ লোকের সমাগম ঘটে।

ফরিদপুর থেকে আসা বাউল সুরেশ শীল বলেন, মায়ের দর্শন নিতে এখানে এসেছি। মনের আশা বাসনা পূরণের জন্য স্নান শেষে মায়ের কাছে আর্শিবাদ করেছি।

জামালপুর হতে আসা অঞ্জনা রানী বলেন, এখানে এলে দেহ-মন পবিত্র হয়। তাই মায়ের মন্দিরে এসেছি।

অপরদিকে, এ উপলক্ষে প্রতিবছর মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে মেলা বসে। মেলায় মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ পাওয়া যায় রকমারি খাবার। সেই সঙ্গে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তকও মেলায় পাওয়া যায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান উদযাপন করার সুবিধার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঘীপূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে যেকোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মাঘীপূর্ণিমা উৎসব উদযাপনের সার্বিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মা ভবানীপুর মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মইনুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারির কারণে এবারে মেলার কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আমরা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য মন্দির উন্মুক্ত রেখেছি। এর পরও সেখানে উপস্থিত জনসমাগম নিয়ন্ত্রনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন