মাতৃদুগ্ধ বিক্রি বাড়ছে অনলাইনে, বাড়ছে ঝুঁকিও | Daily Chandni Bazar মাতৃদুগ্ধ বিক্রি বাড়ছে অনলাইনে, বাড়ছে ঝুঁকিও | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ১৫:২৩
মাতৃদুগ্ধ বিক্রি বাড়ছে অনলাইনে, বাড়ছে ঝুঁকিও
অনলাইন ডেস্ক

মাতৃদুগ্ধ বিক্রি বাড়ছে অনলাইনে, বাড়ছে ঝুঁকিও

কি পাওয়া যায় না অনলাইনে, তা খুঁজে বের করা মুশকিল। হাজারো পণ্যের সমাহার নেট মাধ্যমে। সম্প্রতি বেড়ে গেছে অনলাইনের মাধ্যমে মাতৃদুগ্ধ বেচাকেনা। কিন্তু হরহামেশাই কেনা এই মাতৃদুগ্ধ সদ্যজাত শিশুর জন্য কতটা নিরাপদ তা নিয়েই থেকে যাচ্ছে সংশয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এই দুধে থাকতে পারে অপকারী ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, মাদক, এমনকি এইচআইভি ভাইরাসও।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক সারা স্টিলে বলছেন, শুরুর দিকে অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রির বিজ্ঞাপনের নিচে ছোট আকারে হলেও ব্যবহারবিধি, বিপদ-আপদ সম্পর্কেও বিধিসম্মত সতর্কীকরণ করা হতো। এখন সেসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে যারা অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ কিনছেন তারা জানতে পারছেন না, এগুলো সদ্যোজাত শিশুর জন্য কতটা ক্ষতিকর।

বডি বিল্ডারদের জন্য অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করে ব্রিটেনে এক নারী মাসে ১০ হাজার পাউন্ড রোজগার করছেন। এমন একটি খবর সম্প্রতি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ ঘটনার পরই মাতৃদুগ্ধ অনলাইনে কিনে শিশুকে পান করানো কতটা নিরাপদ তা নিয়ে সোচ্চার হন বিশেষজ্ঞরা।

সারা স্টিলে বলেন, এটা মনে রাখা দরকার যে, এটি সরাসরি শরীরে যায়। কিন্তু গত সপ্তাহে তিনি লক্ষ্য করেন যে যারা অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করছেন তারা সতর্ক করছেন না। তিনি বলেন, কার কাছ থেকে এই দুধ সংগ্রহ করা হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না। যার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে তার শরীরে নানা রকম রোগ জীবাণু থাকতে পারে, যেটি পুরোপুরি অনিরাপদ।

ই-বের একটি অনলাইন বিজ্ঞাপনে দেখা যায় যে, গত বৃহস্পতিবার ৩৬ বছর বয়সী এক নারী ১৫০ মিলিলিটার দুধ বিক্রি করতে চান ১৫ ইউরোতে। তিনি জানান, গত ১০ জানুয়ারি তিনি মা হয়েছেন এবং মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করতে চান। ফ্রোজেন জেল প্যাকে সেটি প্যাকেটজাত করার কথাও জানা যায়।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বিষয়টি নজরে আনার পর ই-বের এক মুখপাত্র বলেছেন, মাতৃদুগ্ধ বিক্রি ই-বেতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন এই পণ্যটি তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে তালিকাভুক্ত হওয়া রোধ করতে স্বয়ংক্রিয় ব্লক ফিল্টার আপডেট করা হচ্ছে।

ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশে মাতৃদুগ্ধ বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যাংক রয়েছে। তবে সেখানে তা দেওয়ার আগে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অনলাইনে বিক্রির ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হয় না।

স্টিলে বলেন, অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধে সাইটোমেগালোভাইরাস বা সিএমভিও থাকছে। বিড়ালের দেহে থাকা এই ভাইরাস সদ্যোজাত শিশুদের জন্য বিপজ্জনক। দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জন্মের পর থেকেই দুর্বল করে দেয় এটি। ফলে, জন্মের ছয় মাসের মধ্যে বা তার সামান্য পরেই নানা ধরনের জটিল রোগের শিকার হয়ে পড়ছে শিশুরা। এই মাতৃদুগ্ধে থাকছে গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়াও। যা শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন