জনস্বার্থের নামে ‘ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ’ চ্যালেঞ্জ করা যাবে না | Daily Chandni Bazar জনস্বার্থের নামে ‘ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ’ চ্যালেঞ্জ করা যাবে না | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৭ আগস্ট, ২০২২ ১১:০৩
জনস্বার্থের নামে ‘ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ’ চ্যালেঞ্জ করা যাবে না
অনলাইন ডেস্ক

জনস্বার্থের নামে ‘ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ’ চ্যালেঞ্জ করা যাবে না

ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট যে আদেশ দেবেন ওই আদেশের যদি রিভিশনাল (আপিল ফোরাম) ফোরাম থাকে, তাহলে ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা যাবে না। সম্প্রতি এক রিটের পর্যবেক্ষণে এ অভিমত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। শনিবার (৬ আগস্ট) এ সংক্রান্ত মামলার আপিল বিভাগের প্রকাশিত রায়ে ওই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।

রাজধানীর জুরাইনে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলায় দুই আইনজীবীর রিমান্ডের বৈধতা নিয়ে করা রিটের রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

ওই রিটে হাইকোর্টের জারি করা রুল খারিজ করে গত ১৯ জুন দেওয়া সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ আসে।

গত ৭ জুন সকাল পৌনে ১০টার দিকে জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসছিল একটি মোটরসাইকেল। তাতে এক নারীসহ দুই আরোহী ছিলেন। কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন কাগজপত্র দেখতে চাইলে মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।

যাত্রীরা ট্রাফিক সার্জেন্টের পরিচয়পত্র দেখতে চান। পরে দুইজনকে পুলিশ বক্সের নেওয়া হলে সঙ্গে থাকা নারী উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে এলাকাবাসী সার্জেন্টকে মারধর করে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই তিনজনের নাম উল্লেখ করে ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।

ওই মামলায় ৮ জুন আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাতসহ পাঁচজনের তিনদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। পাঁচজনের মধ্যে একজন আইনজীবী ও একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী ছিলেন।

আইনজীবীদের রিমান্ডের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফজলে এলাহী। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ জুন হাইকোর্ট মামলার নথি তলব করে রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেন।

এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদনের পর চেম্বারজজ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জুন আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আসে।

ওই দিন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলে ১৯ জুন পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। একই সঙ্গে রিট আবেদনকারীর আইনজীবীদের অধস্তন আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করতে বলেন। এরপর ওইদিন আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাতকে জামিন দেন অধস্তন আদালত।

১৯ জুন শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের রুল খারিজ করে করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

এই রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির অধীনে ম্যাজিস্ট্রেট এই আদেশ (রিমান্ড) দিয়েছেন। জনস্বার্থে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ সেশন কোর্টের রিভিশনাল বিচারে সংশোধনযোগ্য।

কেউ যদি ম্যাজিস্ট্রেটের রিমান্ড আদেশে সংক্ষুব্ধ হন তাহলে তারা রিভিশন চেয়ে সেশন কোর্টে আবেদন করতে পারেন। তৃতীয় পক্ষ এ রিমাণ্ড আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্টে রিট করার এখিতয়ার নেই।

আদালত আরও বলেন, আইনের ভেতরে থেকে যখন কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা আদেশ দেন, তখন ১০২ অনুচ্ছেদের অধীনে সেই আদেশে হস্তক্ষেপ করা যায় না।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন