
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় ত্যাজ্যপুত্র করবে বলায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছেলে ও তার শ্যালক গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব আলকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবদুল মমিন (৬৫) ওই গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেফতাররা হলেন- মমিনের ছেলে ফারুক রাজিব (৩৫) ও ছেলের শ্যালক আবদুল মজিব সুমন (৩২) গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয়রা জানান, আবদুল মমিনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলে মো. ফারুক ওরফে রাজিব পেশায় একজন দলিল লেখক। ছেলের সঙ্গে বাবার ভাল সম্পর্ক ছিল না। আবদুল মমিন ও তার স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। ছেলে মো. ফারুক স্ত্রী সন্তান নিয়ে পরশুরাম উপজেলা সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। দুই মেয়ে তাদের স্বামীর বাড়িতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছেলে ফারুক ও তার শ্যালক আবদুল মজিব সুমনকে (৩২) সঙ্গে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যান। বৃদ্ধ আবদুল মমিন তখন ঘরের ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মাকে নির্যাতন করা নিয়ে বাবা-ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মমিন ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করবে বলে জানান। এ কথা শুনে ফারুক আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ঘরে থাকা লাকড়ি দিয়ে বাবাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে জখম করেন। মাকে শিখিয়ে দেন ‘বাড়িতে ডাকাতের হামলায় তার বাবা আহত হয়েছে’। পরে ফারুক ও তার শ্যালক সুমন বাড়ি থেকে চলে যান।
শোর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধ আবদুল মমিনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে দ্রুত ফেনী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টায় মমিন মারা যায়। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।
এ ঘটনায় বৃদ্ধের মেয়ে পনি আক্তার বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবাকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। রাতেই ছেলে ও তার শ্যালককে গ্রেফতার করা হয়ে। মরদেহ মর্গে রয়েছে। গ্রেফতার দুজনকে আজ ফেনীর আদালতে পাঠানো হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন