ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাচ্ছে ইউক্রেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। কুলেবা জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে ছিন্ন করতে তিনি জেলেনস্কিকে প্রস্তাব দিয়েছেন।
সম্প্রতি রাজধানী কিয়েভ এবং অন্যান্য শহরে ইরানের তৈরি ড্রোন দিয়ে মস্কো হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন।
বলা হচ্ছে, ইরানের তৈরি কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে। পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে একমত পোষণ করে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়াকে ইরানের বিস্ফোরক ড্রোন সরবরাহ, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন।
কিয়েভ ছাড়াও সোমবার দেশটির আরও দুটি অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এতে দেশটির শত শত গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রাজধানী কিয়েভে হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে তেহরান মস্কোকে কামিকাজে ড্রোন সরবরাহ করার কথা অস্বীকার করেছে।
ইউক্রেন হামলায় ব্যবহৃত এসব ড্রোন চিহ্নিত করেছে দেশটি। এগুলো মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি)-কে ইরানি শহীদ-১৩৬ অস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মঘাতী অভিযান চালানো জাপানি যোদ্ধা পাইলটদের নামানুসারে এগুলোকে কামিকাজে ড্রোনও বলা হয়। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে যে তারা একদিনে কমপক্ষে ৩৭টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। তবে রাশিয়াকে এই অস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইরান।
কামিকাজে জাপানি শব্দ। যার অর্থ হলো আত্মঘাতী। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জাপানিরা একটি কৌশল ব্যবহার করতো। সেটি হলো শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে বিমানসহ আত্মঘাতী হামলা।
আল জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যালেক্স গ্যাটোপোলোস বলেছেন যে, এই অস্ত্রগুলো একটি অঞ্চলের ওপর ঘোরাফেরা করতে পারে হামলার স্থান শনাক্ত করার আগে এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে ধ্বংস হয়ে যায়।
এদিকে দিমিত্র কুলেবা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার পুরো দায় তেহরানকেই নিতে হবে। ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে রাশিয়াকে সহায়তা করার জন্য ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন