দেখতে দেখতে ১৫টি বছর পার হয়ে গেছে। এই ১৫ বছরে সঠিক পরিকল্পনা করে এগিয়ে গেছে আফগানিস্তান। আইসিসির সহযোগি দেশগুলোপর্যন্ত এরমধ্যে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে দেখিয়েছে। অথচ, বাংলাদেশ হেঁটেছে শুধুই পেছনের পায়ে। টি-টোয়েন্টিতে একটি ভালোমানের দল হয়ে উটতে পারলো না টাইগাররা।
২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল। সেইটাই প্রথম, যেন সেটাই ছিল শেষ। এর মধ্যে সব মিলিয়ে সাতটি বিশ্বকাপ চলে গেলো। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ বার বিশ্বকাপ জিতলো; কিন্তু বাংলাদেশ রয়ে গেলো সেই তলানীতেই।
২০০৭ সালের পর আরও ৬টি ম্যাচ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জিতেছে। কিন্তু কোনোটিই মূল পর্বে নয়। বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগও অনেক পেয়েছে। জয়ের সুযোগও তৈরি করেছিল অনেক। কিন্তু কাঙ্খিত জয়ের দেখাটিই আর পেলো না।
অবশেষে সেই আক্ষেপ, সেই জয়ের খরা ঘুচলো বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের মূল পর্বে ১৫ বছর পর বাংলাদেশ প্রথম জয়ের দেখো পেলো এবার নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে।
হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ১৩৫ রানে অলআউট হলো নেদারল্যান্ডস। ৯ রানের জয়ে এবারের বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করলো টাইগাররা।
মূল পর্বে এটা হয়তো দ্বিতীয় জয়, কিন্তু বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়। সুপার এইট, সুপার টেন কিংবা সুপার টুয়েলভ- যে নামেই থাক না কেন, দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ মোট ১৭টি ম্যাচ খেললো। ১৬টি ম্যাচে পরাজয়ের পর এই প্রথম একটিতে পেলো জয়ের দেখা।
২০০৭ সালে আফতাব আর আশরাফুলের ব্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এর সাত বছর পর পেলো দ্বিতীয় জয়ের দেখা। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে বাংলাদেশ হারায় ৯ উইকেটে। আফগানরা অলআউট হয়েছিল ৭২ রানে। বাংলাদেশ তামিমের উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
একই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ পেলো তৃতীয় জয়ের দেখা। অভিষিক্ত নেপালকে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৮ উইকেটের ব্যবধানে। নেপাল ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান করার পর ১৫.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
এরপর ২০১৬ বিশ্বকাপে ভারতের ধর্মশালায় প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও তামিমের ব্যাটে বাংলাদেশ জয় পায় ৮ রানে। তামিমের অপরাজিত ৮৩ রানের ওপর ভর করে ৭ উইকেটে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। জবাবে ৭ উইকেটে ১৪৫ রান তুলে ফেলে নেদারল্যান্ডস। ফলে মাত্র ৮ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
পরের ম্যাচ ছিল ওমানের বিপক্ষে। এই ম্যাচেই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরিটি তুলে নেন তামিম ইকবাল। তার ১০৩ রানের ওপর ভর করে ২ উইকেটে ১৮০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে নেপাল করতে পারে কেবল ৯ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশ ৫৪ রানে জয়ী হয়।
এরপর ২০২১ বিশ্বকাপের শুরুতে স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে বাজেভাবে শুরু। পরের দুই ম্যাচে ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে বাংলাদেশ ঠাঁই করে নেয় সুপার টুয়েলভে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে গিয়ে ৫ ম্যাচের সবগুলোতে হেরে বিদায় নিয়ে আসতে হয়েছিলো টাইগারদের।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন