তিনি ছিলেন ফুটবলের জাদুকর, ফুটবলের শিল্পী। পায়ের কারুকাজে, শৈলীতে তিনি ফুটবলের উথাল-পাতাল প্রেমে মজিয়েছিলেন গোটা দুনিয়াকে।
৬০ বছরের জীবনে উল্কার গতিতে ছুটেছেন, জীবনকে উপভোগ করেছেন প্রাণভরে। বিপথে গেছেন, বিতর্কে জড়িয়েছেন। কিন্তু মানুষ তাকে ভালোবেসেছে পাগলের মতো। সেই ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে ছাড়া এবার বিশ্বকাপ। তার জন্মের পর থেকে ২০১৮ অবধি সব বিশ্বকাপে তিনি কোনোটায় খেলোয়াড় কোনোটায় কোচ কোনোটায় দর্শক হিসেবে ছিলেন। শুধু এবারই নেই।
১৯৬০ সালে তার জন্মের আগে হয়েছে ৬টি বিশ্বকাপ। ‘এল পিবে দে ওরো (গোল্ডেন বয়)’, এই বিশ্ব–সংসারে আসার পর আরও ১৫টি বিশ্বকাপ হয়েছে। ১৯৮২ বিশ্বকাপ থেকে হিসেব করলে এ পর্যন্ত ১০টি বিশ্বকাপে সবকিছু ঠিকই ছিল। এবার যে শূন্যতার রেখা দেখা যাবে।
তার মৃত্যু নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তির মস্তিস্কে রক্ত জমাট বাঁধায় অস্ত্রোপচার করানো হয়। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় ৬০ বছর বয়সী ম্যারাডোনার শরীরে আরও নানারকম জটিলতা ছিল। কোকেন এবং মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বুয়েনস আয়ার্সে এক বাড়িতে সুস্থ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু তাকে বিছানায় মৃত পাওয়া যায়, সেটি অস্ত্রোপচারের দুই সপ্তাহ পর। তখন হার্ট অ্যাটাককে মৃত্যুর কারণ বলা হয়েছিল।
কি দারুণ এক ক্যারিয়ার। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ২-১ গোলে হারের মুখ দেখেছিল ইংল্যান্ড। ওই ম্যাচে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন মারাদোনা স্বয়ং। ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম গোলটি তিনি করেছিলেন বিতর্কিত ভঙ্গিমায়। হেড করার বদলে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। যাকে ‘হ্যান্ড অব গড’ বলে পরবর্তীতে আখ্যা দিয়েছিলেন স্বয়ং আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ফুটবল যতদিন থাকবে ততদিন থাকবেন তিনি। তাকে মনে রাখবে এই পৃথিবী।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন