শুরুটা যে এতটা খারাপ হবে তা বোধহয় কাতারও কল্পনা করেনি। প্রথমবার বিশ্বকাপ আয়োজন করে স্বাগতিক দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে কাতার। কিন্তু স্বাগতিক দেশের ইতিহাস অক্ষুণ্ণ রাখতে ব্যর্থ হলো মধ্যপ্রাচের তেলসমৃদ্ধ দেশটি। বিশ্বকাপ ইতিহাসে স্বাগতিক দেশ হিসেবে ১ম ম্যাচ হেরে বসলো কাতার। এর আগে আর কোনো বিশ্বকাপেই এমনটা দেখা যায়নি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে ০-২ ব্যবধানে হেরেছে কাতার।
উদ্বোধনী ম্যাচে কাতার মুখোমুখি হয়েছিল ইকুয়েডরের। লাতিন পরাশক্তিদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই পারেনি কাতার। ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে এগিয়ে থাকে ইকুয়েডর। সেই ফায়দা নিয়ে ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় ভ্যালেন্সিয়ার গোলে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। কিন্তু ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারির সহায়তায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে গোলটি অফসাইড ছিল। ফলে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু ১ম গোলের দেখা পেতে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি ইকুয়েডরকে। ম্যাচের ১৬ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন সেই ভ্যালেন্সিয়া।
ম্যাচের প্রথমার্ধের ১৬ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর ভ্যালেন্সিয়াকে ফাউল করে বসেন কাতারি গোলরক্ষক সাদ আল সায়েব। আর তাতেই রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে গোল করে এবারের বিশ্বকাপের ১ম গোলটি করেন ইকুয়েডর। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোন উদ্বোধনী ম্যাচের গোল আসলো পেনাল্টি থেকে।
ম্যাচের ২৯ মিনিটে টরেস এবং ভ্যালেন্সিয়ার যৌথ একটি প্রচেষ্টা রুখে দেন খোকি। এর ঠিক ২ মিনিট পরেই আবারো গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া। এবার রাইট উইং থেকে এঞ্জেলিনো প্রেসিয়াডোর ক্রসে হেড থেকে গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া। প্রথমার্ধের একদম অন্তিম মুহূর্তে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন কাতারি স্ট্রাইকার আলমোয়েজ আলি। ডি বক্সের ভেতর বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও হেড দিয়ে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে খেই হারিয়ে ফেলে কাতারি দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই চাপ অব্যাহত রাখে ইকুয়েডর। ৫২ মিনিটে প্রেসিয়াডোর শট গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়। ৫৫ মিনিটে মেন্ডেজের করা শট দুর্দান্ত ভঙ্গিমায় রুখে দেন কাতার গোলরক্ষক আল সায়েব। ৭৫ মিনিটে কাতারের আফিফের ২২ গজ দূর থেকে করা শট গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে না গেলে ১ম গোলের দেখা পেতো দলটি। ম্যাচের শেষ দিকে গোল শোধের প্রচেষ্টা চালালেও স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় আর গোল পায়নি কাতার। ফলে ০-২ ব্যবধানের হার নিয়েই বিশ্বকাপ শুরু করে কাতার।
পুরো ম্যাচে রেফারি মোট ৬ বার হলুদ কার্ড দেখান দুই দলের খেলোয়াড়দের যা কি না ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপের বলিভিয়া ও জার্মানির উদ্বোধনী ম্যাচের ৭টি হলুদ কার্ডের পর সর্বোচ্চ। কাতারের এই হারে স্বাগতিক দেশের প্রথম ম্যাচে অপরাজিত থাকার ধারা ক্ষুণ্ণ হলো। এর আগের ২২টি ম্যাচে স্বাগতিকরা ১৬টি জয় এবং ৬টি ড্র করেছিল তাদের প্রথম ম্যাচে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন