সামনে ছিল ৫১৩ রানের বিশ্বরেকর্ড লক্ষ্য। যেখানে টেস্ট ইতিহাসেই ৪১৮ রানের বেশি তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই, সেখানে বাংলাদেশ এই ম্যাচে অসাধ্য সাধন করে ফেলবে, এমন ভাবা বাড়াবাড়িই ছিল।
তবে দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত আর জাকির হাসান উদ্বোধনী জুটিতে ১২৪ রান তুলে দেওয়ার পর আশায় বুক বেঁধেছিলেন সমর্থকরা। জাকির হাসান তার অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন, বাকিদের মধ্যে দুই-একজন এমন কিছু করতে পারলেই তো হবে!
কিন্তু বাস্তবতা আর স্বপ্নপথের দূরত্ব তো যোজন যোজন। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন ছুঁতে পারলো না। যেতে পারলো না কাছাকাছিও। চট্টগ্রাম টেস্টে সাকিব আল হাসানের দলকে ১৮৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ভারত।
এই টেস্টে প্রথম ইনিংসটাই পিছিয়ে দিয়েছিল টাইগারদের। তাদের ১৫০ রানে গুটিয়ে দিয়ে ভারত অলআউট হয় ৪০৪ রানে। উইকেটের অবস্থা দেখে বাংলাদেশকে আর ফলোঅন করায়নি ভারত। দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। ফলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের রক্ষ্য দাঁড়ায় ৫১৩ রানের।
দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য লড়েছে সাকিব বাহিনী। শেষ পর্যন্ত ১১৩.২ ওভারে অলআউট হয়েছে ৩২৪ রানে। ম্যাচশেষে তাই একটা আক্ষেপ রয়েই গেছে, প্রথম ইনিংসটায় যদি ওমন বিপর্যয় না হতো!
৬ উইকেটে ২৭২ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। সাকিব ৪০ আর মিরাজ ৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন। জিততে হলে শেষ দিনে বাংলাদেশকে করতে হতো আরও ২৪১ রান।
সাকিব আর মিরাজ যেহেতু ক্রিজে ছিলেন, ক্ষীণ সম্ভাবনা বেঁচে ছিল। তবে সাতসকালে মিরাজ (১৩) মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হয়ে ফিরলে সেই সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যায়।
লোয়ার অর্ডার নিয়ে ওতদূরের পথ পাড়ি দেওয়া অসম্ভব, বুঝে গিয়েছিলেন সাকিব। তাই সঙ্গী হারিয়ে মারমুখী ভূমিকায় হাজির হন টাইগার অধিনায়ক।
যেভাবে খেলছিলেন, সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও ছিল। তবে শেষতক আর হয়নি। ১০৮ বলে ৮৪ রান করে কুলদ্বীপ যাদবের বলে বোল্ড হয়েছেন সাকিব। মারমুখী ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে সমান সংখ্যক ছক্কা হাঁকান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
সাকিব ফেরার পর লেজটা মুড়ে দিতে আর সময় লাগেনি ভারতের। ৪ রানের মধ্যে তারা তুলে নিয়েছে বাকি দুই উইকেট। তাইজুল ইসলাম ৪ আর এবাদত আউট হন শূন্য রানে।
অক্ষর প্যাটেল ৭৭ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট। ৩ উইকেট শিকার প্রথম ইনিংসে ফাইফার নেওয়া কুলদ্বীপ যাদবের।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন