বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা নিষিদ্ধ করার পর, দেশি ও বিদেশি কোনো বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) আফগান নারীরা কাজ করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছে তালেবান সরকার। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।
তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসলামি পোশাকরীতি মেনে কর্মক্ষেত্রে না আসার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নিষিদ্ধ করার পর, নারীদের কাজের অধিকার নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে তালেবান সরকার।
এ বিষয়ে আফগানিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল রহমান হাবিব বলেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নারীরা এনজিওতে কাজ করতে পারবেন না। কারণ, অনেক নারী ইসলামি পোশাকরীতি না মেনেই অফিস করছিলেন।
এদিকে, তালেবান সরকারের এমন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘের উপবিশেষ প্রতিনিধি রমিজ আলাকবারভ।
তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে, তা গভীর উদ্বেগের। এটি মানবিক নীতি ও অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তালেবান সরকারের এ সিদ্ধান্ত জাতিসংঘের মতো সংস্থার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে জাতিসংঘ আফগানিস্তানে মানবিক সংকট মোকাবিলায় বড় ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রকল্পে অনেক নারী প্রতিনিধি রয়েছেন। তাই সংস্থাটির পক্ষ থেকে সরকারের এ চিঠির স্পষ্ট ব্যাখ্যা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি তালবান সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন করেছিল নরওয়ের সার্জ ডি–অ্যাফেয়ার্স পল ক্লোউম্যান। গতকাল তালেবানের এ চিঠির খবর প্রকাশের পর তিনি বলেন, এনজিওতে নারীদের কাজ করার ব্যাপারে তালেবান যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
গত বছরের আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর নারী অধিকার রক্ষার কথা বললেও, সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি তালেবান সরকার।
নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করায় বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানী কাবুল থেকে পাঁচ নারী শিক্ষার্থীকে আটক করে তালেবান সরকার।
নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যন্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, তালেবান সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার খেসারত দিতে হবে। তারা যদি আফগান নারীদের মৌলিক অধিকার অস্বীকার করতে থাকে, তবে আন্তর্জাতিক মহলে তাদের সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে না।
সূত্র: আল জাজিরা
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন..