পৌষের এ সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের অনেক জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতেও বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত নেত্রকোনায় তিন মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
সারাদেশেই রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। যেখানে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ যে দশমিক ৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার দুপুর ১২টায় শ্রীলঙ্কা উপকূল অতিক্রম করেছে। এটি ক্রমাগত পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা অবস্থান করছে।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় হালকা বা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘণকুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি
ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এ সময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে জানিয়ে হামিদ মিয়া বলেন, আগামী তিনদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃষ্টিপাতের কারণ জানিয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপ বিদ্যমান। একই সঙ্গে হিমালয় পর্বতের ঠিক উপরে অবস্থান করছে একটি শক্তিশালী জেট স্ট্রিম। এ জেট স্ট্রিমের অগ্রবর্তী অর্ধেক অংশ ২৪ ডিসেম্বর পর বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার রাজ্যের ওপর অতিক্রম করছে। নিম্নচাপের কারণে আকাশে যে মেঘের সৃষ্টি হয়েছে সেই মেঘের জলীয় বাষ্পকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আরাকান পর্বত এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মেঘালয় পর্বতের দিকে প্রবাহিত করছে। জেট স্ট্রিম ও মেসন জুলিয়ান দোলনের ফলে সৃষ্ট দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত বায়ু। বঙ্গোপসাগর হতে সৃষ্ট গরম ও ভেজা বাতাস আরাকান পর্বত ও মেঘালয় পর্বতের ঢাল বেয়ে আকাশে উঠে গিয়ে ভারি মেঘের সৃষ্টি করবে যে মেঘ থেকে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতেও কিছু বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন..