তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যু বেড়ে ৬০ | Daily Chandni Bazar তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যু বেড়ে ৬০ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৬:১৩
তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যু বেড়ে ৬০
অনলাইন ডেস্ক

তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যু বেড়ে ৬০

তীব্র তুষার ঝড়ে বিপর্যস্ত নিউইয়র্কসহ গোটা যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র নিইয়র্কেই ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারমন্ট, ওহাইও, মিসৌরি, উইসকনসিন, কানসাস ও কলোরাডোতেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকে দিনের তুষার ঝড়ে বেশির ভাগ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে লেক এরির ধারে বাফেলো শহর ও এর আশপাশের এলাকায়। শুক্রবার তুষারঝড় শুরুর পর থেকে বাফেলোতে ৪ ফুটেরও বেশি তুষারপাত হয়েছে। ভারী তুষারপাত আর হিমশীতল বাতাসে বাফেলো চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এবং সড়কে বহু যানবাহন আটকা পড়েছে। এমকি জরুরি পরিষেবার গাড়ি ও অ্যাম্বুলেনস্ চলাচল করতে পারছে না।

এরি কাউন্টির নির্বাহী মার্ক পোলোনকারজ বলেছেন, সোমবার বাফেলো এলাকায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে গিয়ে ঠেকেছে। রোববার এই সংখ্যা ১৩ ছিল বলে জানা গিয়েছিল। তিনি বলেন, সর্বশেষ মৃত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে গাড়ির ভেতর আর কয়েকজনকে তুষারের নিচে পাওয়া যায়।

এক সংবাদ সম্মেলনে পোলানকারজ বলেন, এ এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। তিনি বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা নাগাদ আরও ৮ থেকে ১৩ ইঞ্চি তুষারপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শুরুতে ১৭ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকলেও এরই মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।

জরুরি যানবাহনগুলোও নিউইয়র্কের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় পৌঁছানোর জন্য লড়াই করছে।

সোমবারও কয়েক হাজার ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। ফ্লাইট-ট্র্যাকিং পরিষেবা ফ্লাইটঅ্যাওয়্যার তথ্যানুসারে, এই পর্যন্ত ৮ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, টেক্সাস থেকে মেইন পর্যন্ত ছড়ানো বিশাল এই ঝড়টির বিস্তৃতি ৩২০০ কিলোমিটার। এনডব্লিউএস বলছে, শুক্রবার বায়ুমণ্ডলের চাপ দ্রুত কমে গিয়ে ঝড়টি ‘বোম্ব সাইক্লোনের’ রূপ নেয়, এতে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে তুষার ঝড়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানার এলক পার্কের তাপমাত্রা নেমে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছিল। মন্টানা অঙ্গরাজ্যের অবস্থা এতটাই হিমশীতল যে, বাতাসে গরম পানি ছুড়লে মুহূর্তেই সেটা তুষারে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। একই সময় মিশিগানের হেল শহর পুরোপুরি বরফের চাদরে ঢাকা ছিল। হেল শহরের তাপমাত্রা মাইনাস ১৭ সেলসিয়াসে নেমে যায়।

পেনসেলভেনিয়া ও মিশিগানে ভারি তুষারপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়াও লুইজিয়ানা, আলাব্যামা, ফ্লোরিডা ও জর্জিয়ায় তাপমাত্রা মাইনাস তিন সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, কেনটাকি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও ওকলাহোমায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও উইসকনসিন ‘জ্বালানি জরুরি অবস্থা’ জারি করেছে।

এদিকে, ঝড়-সম্পর্কিত ব্যাপক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ওহাইওতে ৫০টি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কতৃপক্ষ। একই রাজ্যে শনিবার পৃথক দুর্ঘটনায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

একমাত্র অঞ্চল যা এই ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে তা হল ক্যালিফোর্নিয়া যেখানে মহাদেশীয় পর্বতমালা রাজ্যটিকে রক্ষা করতে সাহায্য করছে।

অন্যদিকে কানাডার অন্টারিও ও কুইবেক প্রদেশেও ঝড়ের তাণ্ডব দেখা গেছে। সেখানকার কয়েকলাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। দেশটির বাকি অধিকাংশ অংশে, ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে নিউফান্ডল্যান্ড পর্যন্ত, চরম শৈত্য প্রবাহ ও শীতকালীন ঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে সেখানে এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন..