রাজধানীর গুলিস্তানের বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত ভবনে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়েছিল। এদিকে বিস্ফোরণে নিহত ১৮ জনের পরিচয় জানা গেছে। বিস্ফোরণে আহত হয়েছে আরো শতাধিক লোক। ভবনের ভেতর কেউ চাপা পড়ে আছে কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কেও এখনো কিছু জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা মঙ্গলবার রাতে সংবাদমাধ্যমকে জনান, উদ্ধারকাজ আপাতত স্থগিত করা হয়েছিল। বুধবার পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।
তিনি জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি, বিস্ফোরণের ফলে ভবনটির বেজমেন্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ও যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এ অবস্থায় ভবনটিতে উদ্ধার অভিযান চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিবেচনায় রেখে রাত ১১টা থেকে ভবনটিতে উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, তাদের ৩০ সদস্যবিশিষ্ট একটি দল ভবনটির সামনে সারারাত থাকবেন। তারা প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে সিদ্দিক বাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। ইতোমধ্যে আহত অবস্থায় শতাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
বিস্ফোরণে নিহতরা হলেন মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস (৬০), নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫), হৃদয় (২০), সম্রাট (১৮) ও সিয়াম (১৮)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। দেয়াল ভেঙে এসে পড়ে রাস্তায়। বহু মানুষ উড়ে এসে রাস্তায় পড়েছেন। সড়কে থাকা বহু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্শবর্তী ভবনগুলোও। ভেঙে পড়েছে অনেক ভবনের কাঁচ। বাসযাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী পর্যন্ত আশেপাশে থাকা সবাই হতাহত হয়েছেন। ঘটনার পর রিক্সা, ঠেলাগাড়ি, ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সসহ যে যেভাবে পেরেছেন আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন