আর্জেন্টিনায় ৬৩ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ব্যাহত কৃষি উৎপাদন | Daily Chandni Bazar আর্জেন্টিনায় ৬৩ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ব্যাহত কৃষি উৎপাদন | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০২৩ ১৫:৪৬
আর্জেন্টিনায় ৬৩ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ব্যাহত কৃষি উৎপাদন
অনলাইন ডেস্ক

আর্জেন্টিনায় ৬৩ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ব্যাহত কৃষি উৎপাদন

গ্রীষ্মকাল শেষ হলেও অভূতপূর্ব তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার জনজীবন। দেশটির জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পূর্ব-মধ্য আর্জেন্টিনায় মার্চের প্রথম ১০ দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৪ থেকে ১৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেশি ছিল।

তাছাড়া, রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে এ পর্যন্ত প্রতিদিনই ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ওপরে তাপমাত্রা দেখা গেছে। এমনকি, চলতি মাসে দেশটির বিভিন্ন জায়গায় গত ৬৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।

দেশটির আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তাপমাত্রা প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে। এতে শুকিয়ে যাচ্ছে ফসলিজমি, ছড়িয়ে পড়ছে দাবালন, নষ্ট হচ্ছে মাঠের পর মাঠ ফসল। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি।

জানা যায়, আর্জেন্টিনায় সাধাণরত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল চলে। দেশটির জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ম্যাক্সিমিলিয়ানো হেরারা বলেন, এবার তাপমাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। মার্চ চলে এসেছে, অথচ তাপমাত্রা কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে হেরারা বলেন, আর্জেন্টিনার ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটেনি। লা নিনার প্রভাবে আর্জেন্টিনায় ‘ক্ষণস্থায়ী গ্রীষ্ম’ আশা করেছিলাম। কিন্তু যা ঘটছে, তা অস্বাভাবিক ও ভয়াবহ। আগামি পাঁচ মাস এ অসহনীয় গরম সহ্য করতে হতে পারে।

আর্থডেইলি অ্যানালিটিক্সের বিশ্লেষক মিকেল আত্তিয়া সিএনএনকে বলেন, আর্জেন্টিনার কর্ডোবা, সান্তা ফে ও উত্তর বুয়েন্স আয়ার্সের কৃষিপ্রধান প্রদেশগুলোতে ভুট্টা ও সয়াবিনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত ৩০ বছরের সবচেয়ে খারাপ খরা দেশটির ভুট্টা ও সয়াবিন উৎপাদনে বিশাল প্রভাব ফেলবে। এমনকি, গত বছরের তুলনায় এবার ফসল উৎপাদনের হার অন্তত ২০-৩০% কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পাশাপাশি ভুট্টা, গম ও সয়াবিনের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশ আর্জেন্টিনা। তবে এবারের অত্যাধিক তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির গম উৎপাদনও। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে, গত বছরের তুলনায় এ বছর গমের রপ্তানি ২৮ শতাংশ কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোজারিও গ্রেনস এক্সচেঞ্জের জুলিও ক্যালজাদা নামের এক কৃষি বিশেষজ্ঞ বলেন, এবার কৃষকরা প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন। এ সংকট দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, আর্জেন্টিনার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড সেন্সাসের (আইএনডিইসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীত ১০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯১ সালের পর এত বেশি মাত্রার মূল্যস্ফীতি দেখেনি এ দেশ। গত কয়েক দশক ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকায় দেশটি এমন তীব্র সংকটের মধ্যে পড়েছে।

সূত্র: সিএনএন

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন