বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীতে প্রথমবারের মতো কোনো ডগ স্কোয়াড পরিচালনার দায়িত্ব পেলেন সাত নারী সদস্য। শুধু বাংলাদেশই নয় দক্ষিণ এশিয়ায় কোনো বাহিনীর ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার এটিই প্রথম।
বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সহযোগিতায় ছয়দিন এই নারী সদস্যদের ডগ স্কোয়াডের হ্যান্ডলার হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণ নেওয়া সাত নারী কনস্টেবল হলেন নাসিমা, তানজীমা, সুনেত্রা, মরিয়ম আক্তার, নিলুফা, অনামিকা ও ইশরাত। তারা বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য। বিমানবন্দর ১৩-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াডে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন এই নারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ব্যারাকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সাত নারী কনস্টেবলের হাতে ডগ হ্যান্ডলার হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করা সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। তারা
এখন থেকে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করবেন। বিমানবন্দরে চোরাই কিংবা অবৈধ কোনো মালামাল আছে কি না তা ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে খুঁজে বের করবেন তারা।
বিমানবন্দর ১৩-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি তোফায়েল আহম্মদ বলেন, বর্তমানে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ছাড়াও ডিএমপি ও র্যাবের ডগ স্কোয়াড রয়েছে। তবে বিমানবন্দর ১৩-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করে নিজেদের ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার গড়ে তুলেছে। বেসিক কে-নাইন হ্যান্ডলার কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেছেন এই সাত নারী পুলিশ সদস্য।
তিনি বলেন, আমরা চাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি নিরাপত্তা পরিস্থিতি যেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ প্রাথমিক ধাক্কাটা সবার সহযোগিতায় সামলাতে পারে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকবে তারপরও সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো এই ইউনিটটা যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
তোফায়েল আহম্মদ বলেন, কে-নাইনকে আমরা আন্তর্জাতিক মানের করতে চাচ্ছি। নারী হ্যান্ডলারদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা এই যাত্রা শুরু করেছি। আশা করি নারীদের নিয়ে আমরা সুন্দরভাবে এই কে-নাইন পরিচালনা করতে পারবে। নারী হ্যান্ডলার বাংলাদেশ আর নেই। আমি যতটুকু জানি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আর কোনো বাহিনীর ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার নেই। আমরাই প্রথম নারী হ্যান্ডলারদের দিয়ে কে-নাইন পরিচালনা শুরু করেছি।
অতিরিক্ত ডিআইজি তোফায়েল আহম্মদ আরও বলেন, আমরা তাদের আগামীতে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেবো। চেষ্টা করবো যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার। এই সাতজন মেয়ে স্বেচ্ছায় এসেছেন। তারা আমাদের ডগ স্কোয়াডের পুরুষ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তারা নতুন যুগের সূচনা করলো বাংলাদেশ পুলিশে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম ও যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্টার টেররিজম অ্যাডভাইজর (উপদেষ্টা) ডোনাল ডেনিসন ও এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জিয়াউল হক প্রমুখ।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন