আগের ম্যাচেই পূরণ করেছিলেন বিরল এক মাইলফলক। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে ৮০০ গোলের উচ্চতা স্পর্শ করেছেন লিওনেল মেসি। তবে, তার সামনে আরও একটি উচ্চতা স্পর্শ করার পাশাপাশি বিরল এক রেকর্ড গড়ার হাতছানি ছিল।
সেই রেকর্ড গড়তে মেসির প্রয়োজন ছিল কেবল ১টি গোল। আর্জেন্টিনার উত্তরাঞ্চলীয় শহর সান্তিয়াগো দেল এস্তেরোর এস্টাডিও ইউনিকো ম্যাডর ডি সিউদাদ-এ কুরাসাওয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বিশ্বসেরা এই ফুটবলার। তবে একটি নয়, কুরাসাওয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করলেন পিএসজির এই সুপারস্টার।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোলের সেঞ্চুরি তো করলেনই। সে সঙ্গে বিশ্বকাপজয়ী একমাত্র ফুটবলার হিসেবে শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা একমাত্র ফুটবলারে পরিণত হলেন লিওনেল মেসি। এই ম্যাচেই মেসির হ্যাটট্রিকে কুরাসাওকে ৭-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের ২০তম মিনিটেই প্রথম মেসির গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝ মাঠ থেকে এ সময় বলটা রিসিভ করেন মেসি, এরপর ডানদিকে কেটে নেয়ে নিচু এক শটে কুরাসাওয়ের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। এই গোলের সঙ্গে সঙ্গেই ক্যারিয়ারে শততম গোলের মাইফলক স্পর্শ করেন তিনি। এরপর আরও দুটি গোল করলেন মেসি। যার ফলে তার নামের পাশে এখন শোভা পাচ্ছে মোট ১০২টি গোল।
শততম গোলের এই উচ্চতায় পৌঁছাতে মেসিকে খেলতে হলো ১৭৪টি ম্যাচ। পানামার বিপক্ষে আগের ম্যাচে গোল করার পর ৯৯টি গোল নিয়ে কুরাসাওয়ের বিপক্ষে মাঠে নামেন তিনি। ওই ম্যাচেই (পানামা) ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোলের উচ্চতায় ওঠেন মেসি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা ফুটবলারদের মধ্যে মেসি তৃতীয়। সবার শীর্ষে রয়েছেন মেসির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। যিনি এখন ১৯৮ ম্যাচে ১২২ গোলের মালিক। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ১০০তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন তিনি। এছাড়া শততম গোলের উচ্চতা স্পর্শ করা আরেক ফুটবলার হলেন ইরানের আলি দাঈ। যিনি করেছেন ১০৯ গোল। ২০০৭ সালেই অবসর নিয়েছেন তিনি।
লাতিন আমেরিকান পুরুষ ফুটবলারদের মধ্যে মেসিই প্রথম এই উচ্চতায় পৌঁছালেন। তবে সব মিলিয়ে দ্বিতীয়। কারণ, ব্রাজিলিয়ান নারী ফুটবলার মার্তা আরও আগে শততম গোল করেছিলেন। এখন তিনি ১০৯ গোলের মালিক।
১০২ গোলের মধ্যে মেসি ৪৬টি গোল করেছেন আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে, ২৮ গোল করেছেন বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে। কোপা আমেরিকায় করেছেন ১৩ গোল, ১৩ গোল করেছেন বিশ্বকাপে (মোট ২৬ ম্যাচে)।
২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক ঘটে মেসির। প্রতিপক্ষ ছিলো হাঙ্গেরি। যে ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিলো আর্জেন্টিনা। তবে, ওই ম্যাচে মাঠে নামার ২ মিনিটের মধ্যেই লাল কার্ড দেখে বহিস্কার হতে হয়েছিলো মেসিকে।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে প্রথম গোলের দেখা পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও এক বছর। ৬ ম্যাচ পর প্রথম ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল পেলেন তিনি। ২০০৬ বিশ্বকাপে সার্বিয়া অ্যান্ড মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে অভিষেক হয় তার। ওই ম্যাচে মাঠে নেমেই ১৩ মিনিটের মধ্যে গোল করেন এবং একটি অ্যাসিস্ট করেছিলেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন