ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গত বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাতে হঠাৎ চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে গোটা আকাশ। মানুষজন প্রথমে ভেবেছিল হয়তো আরও একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হচ্ছে। কিন্তু সেটি না হওয়ায় রহস্য দানা বাঁধতে থাকে। শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা।
এ ঘটনার দু-তিনটি সম্ভাব্য কারণের কথা জানিয়েছে সরকারি কর্তৃপক্ষ। সবশেষ ব্যাখ্যা এসেছে ইউক্রেনের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে। তারা বলছে, এই আলোর সূত্র সম্ভবত কোনো উল্কাপিণ্ড। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সেটি থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয়েছে। তবে এখনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাজির করতে পারেনি তারা।
এদিন কিয়েভের বাসিন্দারা প্রথমে ধরেই নিয়েছিলেন, তারা আরেকটি রুশ বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে পড়ছেন। সতর্কীকরণ সাইরেনও বেজে ওঠে। কিন্তু ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী রুশ হামলার শঙ্কা নাকচ করে দেয়।
পরে ইউক্রেনের সরকারি কর্তৃপক্ষ ধারণা দেয়, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পরিত্যক্ত কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ হয়তো বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে এবং আলোর ঝলকানির সূত্রপাত সেখান থেকেই।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পোপকো সামাজিক যোগাযোমাধ্যম টেলিগ্রামে বলেন, নাসা আগেই জানিয়েছিল, ৩০০ কেজি ওজনের একটি অকেজো কৃত্রিম উপগ্রহ বুধবার রাতে বায়ুমণ্ডলে ঢুকতে করতে পারে।
কিন্তু নাসার মুখপাত্র রব মারগেটা জানিয়েছেন, কিয়েভের আকাশে যখন ওই আলোর ঝলকানি দেখা গিয়েছিল, সেসময় তাদের উপগ্রহটি নির্ধারিত কক্ষপথেই ছিল।
স্যাটপ্লেয়ার নামে যে ওয়েবসাইটটি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহগুলোর ওপর সবসময় নজর রাখে, তারা জানায়, বুধবার রাত ১০টার সময় মার্কিন উপগ্রহটি ইউক্রেনের ধারেকাছেও ছিল না।
নাসা ২০০২ সালে রেসসি নামে কৃত্রিম এই গবেষণা উপগ্রহটি পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠিয়েছিল। ২০১৮ সালে সেটি পরিত্যক্ত হয়।
ইউক্রেনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে রহস্যময় এই আলোর ঝলকানি নিয়ে নানা জল্পনা ও গুজব চলছে। অনেকে বলছে, ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের কাজ ছিল এটি।
তবে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহনাত একটি টিভি চ্যানেলকে বলেন, প্রতিবেশী বেলারুশের উত্তরাঞ্চলেও এই ঝলকানি দেখা গেছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন