জাপান দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু, হৃদয়ের খুব কাছের: প্রধানমন্ত্রী | Daily Chandni Bazar জাপান দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু, হৃদয়ের খুব কাছের: প্রধানমন্ত্রী | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ১৬:০০
জাপান দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু, হৃদয়ের খুব কাছের: প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

জাপান দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু, হৃদয়ের খুব কাছের: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র জাপানকে দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু ও হৃদয়ের খুব কাছের বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনের দুই মাসের মধ্যেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে জাপান অন্যতম। জাপান আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে জাপানের অবিচল সমর্থন পেয়েছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সরকারি উন্নয়ন সহায়তা পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘জাপান আমাদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে’ শিরোনামের একটি নিবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারপ্রধানের চারদিনের টোকিও সফরকালে সেদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য জাপান টাইমস’-এ নিবন্ধটি প্রকাশ করা হয়েছে।

নিবন্ধে শেখ হাসিনা লিখেছেন, আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যে বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে আমি আবার টোকিওতে এসেছি। আমি মহামান্য সম্রাট নারুহিতো এবং সম্রাজ্ঞী মাসাকোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমাকে আমন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকেও শ্রদ্ধা জানাই। আবে ছিলেন বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধু।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার লাভের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতি দেওয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে জাপান অন্যতম।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন জাপান অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে, যা আমরা কখনো ভুলিনি বা ভুলবো না। সবচেয়ে অবিস্মরণীয় ঘটনা, জাপানি স্কুলশিশুরা তখন টিফিনের টাকা জমিয়ে সেই টাকা ঘূর্ণিঝড় এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের মানুষের জন্য সহায়তা হিসেবে দিয়েছিল।

সরকারপ্রধান বলেন, সেই থেকে জাপান আমাদের দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে রয়ে গেছে। জাপান আমার হৃদয়ের খুব কাছের একটি দেশ, ঠিক যেমন এটি আমার পরিবার এবং আমাদের জনগণের কাছে।

তিনি বলেন, আমার ছোট বোন শেখ রেহানা জাপানের সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত। কারণ, সে আমাদের পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আমাদের ছোট ভাই শেখ রাসেলের সঙ্গে ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে প্রথম জাপান সফর করেছিল।

জাপানের প্রতি তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্পর্শকারতার উত্তরাধিকার লালন করার পাশাপাশি দেশটির বিস্ময়কর উন্নয়নের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাপানের উন্নয়ন দেখে মুগ্ধ এবং জাপানকে মডেল হিসেবে অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাপানের জাতীয় পতাকার নকশা দেখেও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। উভয় পতাকাই বাংলাদেশের জন্য গাঢ় সবুজ এবং জাপানের জন্য সাদা রঙের পটভূমির বিপরীতে কেন্দ্রে লাল বৃত্তসহ আয়তাকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের (বঙ্গবন্ধু, রেহানা ও শেখ রাসেল) ফিরে আসার পর, তারা প্রায়ই তাদের জাপানের স্মরণীয় অভিজ্ঞতার কথা বলতেন। সেগুলো আমাদের স্মৃতিতে রয়ে গেছে, যা আমাদের এখন আরও বেশি বেদনার্ত করে। সেই ঐতিহাসিক সফরের পর রেহানা এবং আমি ছাড়া আমাদের পরিবারের সব সদস্যকে মাত্র ২২ মাসের মাথায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, অতএব, আমি জাপানের অমূল্য অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে বারবার এখানে আসি। এগুলো আমাকে এই মহান দেশের ভাবমূর্তির মতো বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য আমার শরীর ও আত্মাকে কাজে লাগাতে এবং আত্মনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে। এখন আমি অনুভব করি, আমাদের দুদেশের সম্পর্ক একটি ঈর্ষণীয় স্তরে জোরদার করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ব্যাপক অংশীদারত্ব থেকে একটি কৌশলগত অংশীদারত্বের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন