দক্ষিণ কোরিয়া সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী | Daily Chandni Bazar দক্ষিণ কোরিয়া সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৭ মে, ২০২৩ ১৬:২৬
দক্ষিণ কোরিয়া সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

দক্ষিণ কোরিয়া সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে সফর করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়োন সুক ইয়োলের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন তিনি। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির মধ্যেই এই দুই নেতার সাক্ষাৎ দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।

রোববার কিশিদার এই দ্বিপাক্ষিক সফরের মাধ্যমে গত ১২ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো জাপানি নেতা সিউলে পা রাখলেন। এর আগে গত মার্চে জাপানের রাজধানী টোকিওতে সফর করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়োন সুক ইয়োল। তার ওই সফরে ঐতিহাসিক বিরোধের একটি অধ্যায় শেষ করতে চেয়েছিলেন তারা। যে অধ্যায় বছরের পর বছর ধরে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কিশিদা বলেন, আমি আশা করি আমাদের আস্থার সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট ইয়োনের সঙ্গে খোলামেলা মতবিনিময় এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, গত মার্চ থেকে অর্থ ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগের বিভিন্ন স্তর তৈরি হয়েছে এবং আমি এই চলমান প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করার পরিকল্পনা করছি।

দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইয়োন এবং কিশিদা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি, দক্ষিণ কোরিয়া-জাপানের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং সামগ্রিক সম্পর্ক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।

১৯১০ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত কোরিয়ান উপদ্বীপে জাপানি উপনিবেশের সময় জোরপূর্বক শ্রম নিয়ে দুদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব ছিল। তবে ইয়োনের সরকার সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি ছাড় দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা আশাবাদী এর বিনিময়ে কিশিদা হয়তো ইতিবাচক কিছুর ইঙ্গিত দেবেন।

মূলত ২০১৮ সালের একটি ঘটনার কারণে দুদেশের সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়তে দেখা যায়। সে সময় দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত দুটি জাপানি কোম্পানিকে তাদের প্রাক্তন বৃদ্ধ কোরিয়ান কর্মচারীদের জোরপূর্বক শ্রমের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এ নিয়ে দুই দেশ একে অন্যের ওপর অর্থনৈতিক প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা আরোপ করতে শুরু করে।

সম্পর্ক উন্নত করতে ইয়োন প্রস্তাব করেছেন যে, জাপানি কোম্পানি নয় বরং দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়ীরা যুদ্ধকালীন শ্রমের শিকার লোকজনকে ক্ষতিপূরণ দেবে। কিন্তু তার এই পদক্ষেপের ফলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে এবং সেই সঙ্গে সমালোচনা হয়েছে যে, ইয়োন জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের প্রচেষ্টায় যা পেয়েছেন তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন।

তবে কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, জাপান তাদের ঐতিহাসিক ভুলের ক্ষমা চেয়েছে। তাই এক্ষেত্রে তাদের আর কিছু করার প্রয়োজন নেই।

সিউল-ভিত্তিক কোরিয়া ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শিন-ওয়া লি বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির মুখে নিরাপত্তা সহযোগিতাকে কেন্দ্র করেই সম্ভবত দুদেশের নতুন সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু আবর্তিত হবে।

এদিকে মার্কিন বিশ্লেষকরাও দুদেশের এই সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টিকে বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। অপরদিকে চলতি মাসের শেষের দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ইয়োন এবং কিশিদার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন