রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট শুরু হয়েছে। বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে একযোগে রাজশাহীর ১৫৫টি ও সিলেটের ১৯০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। দুই সিটিতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটারদের সুবিধার জন্য ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটিও।
জানা গেছে, দুই সিটি নির্বাচনে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার এবং আর্মড পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুরো নির্বাচনী এলাকায় সাত জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে থাকছে সিসি ক্যামেরা।
সিলেট সিটি
এবার সিলেটে ভোটে নেমেছেন মোট ৩৬৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে মেয়র পদে লড়ছেন ৮ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)। তবে নির্বাচন বর্জন করেছেন হাত পাখার মাহমুদুল হাসান।
নগরীর ৫৬ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ৩৬০ জন। তবে অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার অভিযোগে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
এ সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন, তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছেন ৬ জন ভোটার। ১৯০ কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৬৭ ভোটকক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে ১৯০ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি ৫৮ কেন্দ্র ঝুঁকিমুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান জানান, সোমবার রাত ১২টার থেকে ৪২ ওয়ার্ডে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ৪২ টিম, পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ১০টিম রয়েছে। প্রতিটি টিমের সঙ্গে রয়েছে ১ প্লাটুন বিজিবি।
রাজশাহী সিটি
এদিকে রাজশাহী সিটিতে প্রচার শেষ হয়েছে সোমবার রাত ৮টায়। চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম নির্বাচন বর্জন করেছেন। তবে প্রচারে শেষদিন পর্যন্ত লিটনসহ জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার সক্রিয় ছিলেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম বিষয়ক মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রফিকুল আলম জানান, সিটির ১৫৫ কেন্দ্রে তিন স্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৪ হাজার সদস্য কাজ করবে। এর মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে থাকবে সাড়ে তিন হাজারের বেশি পুলিশ।
রাজশাহী র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার জানিয়েছেন, কেন্দ্রের বাহিরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে ২৫০ জন র্যাব সদস্য মাঠে থাকবে। এছাড়া ভোটের মাঠে থাকবে ৭ প্লাটুন বিজিবি।
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৫৫। এরমধ্যে ১৪৮টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৭২ জন। নির্বাচনে ২৯ ওয়ার্ডে ১১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১০ সংরক্ষিত নারী আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৬ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী।
রিটার্নিং অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১৫৫টি কেন্দ্রের এক হাজার ১৫৩টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রতিটি বুথেই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রের বাইরেও সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। মোট এক হাজার ৫৬০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে ঢাকা থেকে ইসি ভোট পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করবে। কোথাও কোনো প্রকার অনিয়ম বা অব্যবস্থাপনা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোটগ্রহণ চলাকালে কোনো কেন্দ্রে কেউ গোলযোগ সৃষ্টি বা সহিংসতার চেষ্টা করলে তাকে কঠোর হাতে দমন করা হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন