কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে ড্রাফট সংকটে গত দুই মাস ধরে পণ্য আমদানিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ সংকটে ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। অন্যদিকে বন্দরে পূর্বে আমদানিকৃত পণ্য স্তূপ হয়ে পড়ে রয়েছে।
স্থলবন্দর ব্যবসায়ীরা জানান, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) চালু না থাকায় টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে ড্রাফটের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করতেন। স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যবসায়ীরা এভাবেই মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি করে আসছেন। সোনালী ও এবি ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানির বিপরীতে ড্রাফট করতেন।
কিন্তু ডলার সংকট দেখিয়ে দুই ব্যাংক ড্রাফট ইস্যু বন্ধ করছে। সম্প্রতি সোনালী ব্যাংক ড্রাফট চালু করলেও ‘আদা ও রসুনের জন্য প্রযোজ্য’ লেখা সম্বলিত সিল মেরে দিচ্ছে।
এ সংকট নিরসনে টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনা ও আমদানি সহযোগিতাকরণ বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম, স্থলবন্দর জিএম এডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি (অব.) মেজর সৈয়দ আনছার মো. কাউছার, স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, কক্সবাজারে সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ডিজিএম মো. আসাদসহ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, মে মাসের শেষের দিকে সোনালী ব্যাংক এবং এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সরকারের কোনো নির্দেশনা ছাড়া ডলার সংকট দেখিয়ে আদা-রসুন ব্যতীত অন্য কোনো মালামাল ডেলিভারি করতে ড্রাফট ছাড়ছেন না। এ কারণে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা কাঠ, সুপারি, আচার, নারিকেল, শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল স্থলবন্দর গ্রাউন্ডে পড়ে আছে। এরমধ্যে অনেক মালামালে পচন ধরেছে। ফলে ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ড্রাফট সংকটে স্থলবন্দরে মালামাল জটসহ সব ধরনের সমস্যা নিরসনে আমরা বৈঠকে করেছি। দ্রুত এটি সমাধানের পথ বের হবে। পাশাপাশি আমরা কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে আদা, রসুন ও পেঁয়াজ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করছি। এসব পণ্য আমাদানিতে আপাতত ড্রাফট চালু রয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ডিজিএম মো. আসাদ বলেন, ডলার সংকটের কারণে হেড অফিসের নির্দেশনায় ড্রাফট বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে হয়েছে। আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে সেভাবে বাস্তবায়ন করছি। ড্রাফট বন্ধ থাকায় স্থলবন্দরের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথাগুলো আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন