বাংলাদেশের কয়েক কোটি নাগরিকের সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে ঢুকলেই পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) সার্ভার থেকে ফাঁস হয়নি বলে এর আগে জানানো হয়েছিল। এবার দাবি করা হয়েছে, এনআইডি সেবা নেওয়া ১৭১টি প্রতিষ্ঠান থেকেও কোনো ধরনের তথ্য ফাঁস হয়নি।
জাতীয় নিরাপত্তার এই বিষয়টি নিয়ে এনআইডির টেকনিক্যাল টিম গত ১০ জুলাই ‘অনলাইনে এনআইডি সংক্রান্ত অবৈধ অ্যাপস/সফটওয়ার ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও মনিটরিং কমিটি’র সভা করে। সভার কার্যবিবরণী থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনআইডি’র সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
সিস্টেম ম্যানেজার সভায় জানান, গত ৯ জুলাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ‘কয়েক লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস- উন্মুক্ত হয়ে গেছে ব্যক্তির নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য’ বিষয়ে বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আজকের জরুরি সভার আয়োজন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাথে যে ১৭১টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাইয়ের কার্যক্রম আছে, তা চলমান। সেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের তথ্য ফাঁস হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে মনিটরিং কার্যক্রম চলমান। এরপর সভাপতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এর পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের বক্তব্য দিতে অনুরোধ জানান।
কমিটির সদস্য সচিব ও অন্যান্য সদস্যরা জানান, ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ফাঁস সংক্রান্ত বিষয়টি খুবই
স্পর্শকাতর। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কার্যক্রম খুব সহজেই প্রতিহত করা যায়, সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে। ১৭১টি পার্টনার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। তাদের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করে তা নিরসনের জন্য আইটি অডিট কার্যক্রম নেওয়াও জরুরি।
সভায় যেসব সুপারিশ করা হয়:
>> আইসিটি, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি গঠন ও সভা করা।
>> তথ্য যাচাইয়ের পলিসি শক্তিশালী ও হালনাগাদ করা।
>> আইটি অডিট কার্যক্রম জরুরি ভিত্তিতে শুরু করা।
>> পার্টনার সার্ভিস অরগানাইজেনের সঙ্গে সভা করে তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন