শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার আর নেই। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারে স্ত্রী ছিলেন। তিনি অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা। এছাড়া পান্না কায়সার বাংলাদেশের একজন ঔপন্যাসিক, গবেষক ও জাতীয় সংসদের সাবেক সাংসদ। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন।
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার ৪ আগস্ট সকাল ৮টায় মারা যান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ, অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের অবদান অপরিসীম। তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’ খেলাঘরের মাধ্যমে এই শ্লোগান সারাদেশের শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেও সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
জানা যায়, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে শহীদুল্লাহ কায়সার এর সাথে তার বিয়ে হয়। সেদিন ঢাকা শহরে কার্ফিউ ছিল। পুরো দেশ তখন গণআন্দোলনে উত্তাল। শহীদুল্লাহ কায়সার এর হাত ধরে তার পরিচয় আধুনিক সাহিত্যের সাথে, রাজনীতির সাথে। তার সংসার জীবন স্থায়ী হয় মাত্র দু’বছর ১০ মাসের মত। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা শহীদুল্লা কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আর ফেরেননি।
এরপর পান্না কায়সার একা হাতে মানুষ করেন তার দু’সন্তান শমী কায়সার এবং অমিতাভ কায়সারকে। এছাড়াও তিনি ১৯৭৩ সাল থেকে শিশু কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ১৯৯০-তে তিনি এই সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পান্না কায়সার ১৯৯৬-২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ছিলেন।
পান্না কায়সার ২৫ মে ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার আরেক নাম সাইফুন্নাহার চৌধুরী। তার স্বামী শহীদুল্লা কায়সার একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক এবং রাজনীতিক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদান রাখার জন্য তাকে ২০২১ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন