খাগড়াছড়িতে শিক্ষকের মারধরে মো. আবদুর রহমান আবির নামের মাদ্রসার হেফজ বিভাগের আট বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
চিকিৎসক মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছেন মাদ্রাসা শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকার বাসিন্দা।
নিহত আবদুর রহমান আবির ভূয়াছড়ি বাইতুল আমান ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। সে পানছড়ি উপজেলার আইয়ুব নগরের সরোয়ার হোসেন ও আমেনা বেগমের ছেলে।
পালিয়ে যাওয়া শিক্ষক আমিনুল ইসলামের নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে পরিবার এবং মাদ্রাসার একাধিক ছাত্র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা অজুহাতে হাফেজ আমিনুল ইসলাম শিশু আবিরকে নির্যাতন করে আসছিলেন। রোববার বিকেলেও তাকে নির্যাতন করেন। এতে আবির বমি করলে অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর তিনি পালিয়ে যান।
নিহত আবিরের খালু নুরুল ইসলাম মোহাম্মদ বলেন, আমার সন্তানও ওই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। সে জানায় শিশু আবিরকে প্রায়ই জর্দা খেতে দিত। খেয়ে বমি করলে বেদম মারধর করতো। এমনি একবার তাকে দানবাক্সে ঢুকিয়ে তালা মেরে রাখে। অনেক পরে তাকে বের করে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শ্বাশতি দাশ জানান, মুখসহ পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বায়তুল আমান ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফরিদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, সন্ধ্যার সময় মুঠোফোনে আমাকে জানানো হয় আবিরকে মারধর করা হয়েছে। সে অসুস্থ। তখন আমি তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমিনুল ইসলামকে বলি। এর কিছুক্ষণ পর আবার ফোন আসে আবির মারা গেছে। তখন আমিনুল ইসলামকে বলি, ‘আপনি হাসপাতালে থাকেন আমি আসছি।’ এর পর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক সুজন চক্রবর্তীর বরাত দিয়ে ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বলেন, শিশুটির শরীরে একাধিক মারধরের চিহ্ন রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করতে আসেননি। তারপরও অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন