একটি চক্র প্রায় এক যুগ ধরে রাজধানীর উত্তরা, এয়ারপোর্ট, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করে। এ কাজ করতে গিয়ে বাধা পেলে বা ধরা পড়লে করতো ছুরিকাঘাত। ২৭ সেপ্টেম্বর ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় এ চক্রের একজনকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। শনিবার মিরপুরের কচুক্ষেত সংলগ্ন সাগরিকা বস্তি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম মো. নাসির। এর আগে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রফিককে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (১ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।
তিনি বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৩টার দিকে উত্তরা ৭নং সেক্টরে বিএনএস টাওয়ারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের ফ্লাইওভারে ওঠার সময়ে এক ছিনতাইকারী ধীরগতির চলন্ত পিকআপে ওঠে। মোবাইল ও টাকা ছিনতাই করে পালানোর সময় গাড়িতে থাকা দেলোয়ার হোসেন তাকে ধরার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারীর অন্য দুই সহযোগী এসে এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে দুই ভাইকে গুরুতর আহত করে। পরে তার মোবাইল ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
মোর্শেদ আলম বলেন, ধস্তাধস্তির সময় ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক আহত দুই ভাইকে চিকিৎসার জন্য কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপর ভাই আনোয়ার হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। ঘটনার পর সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রফিককে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে এবং নাসিরকে মিরপুরের কচুক্ষেত সংলগ্ন সাগরিকা বস্তি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার মো. রফিক (৩৮) ট্রাক, মিনিট্রাক, পিকআপ টার্গেট করে দ্রুত গাড়িতে উঠে যায়। ছিনতাই করার সময় স্পটে থাকেন মো. নাসিরসহ (২০) অজ্ঞাত আসামিরা। তারা ছিনতাই করার সময় যদি ছিনতাইকারী জনগণের কাছে ধরা পড়ে তাহলে চাকু দিয়ে জনগণকে জখম করে ছিনতাইকারীকে ছিনিয়ে আনে এবং সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রায় এক যুগ ধরে তারা রাজধানীর উত্তরা, এয়ারপোর্ট, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করে আসছেন।
মামলার প্রধান আসামি মো. রফিকের (৩৮) বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৩টি মাদক মামলা রয়েছে। দ্বিতীয় আসামি নাসিরের বিরুদ্ধে রয়েছে একটি মাদক মামলা। জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান মোর্শেদ আলম।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন