প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলো কেউ দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেনি। একমাত্র আওয়ামী লীগই মানুষের উন্নয়ন করেছে। বাঙালির ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা এদেশের মানুষের উন্নয়নে মনোযোগী ছিল না। একমাত্র আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসার পর এদেশের মানুষের উন্নয়ন করেছে।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই এদেশে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বাচনের কথা বলে আর আমাদের ক্ষমতা থেকে হটানোর কথা বলে, তারা কখনও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। ভোট চুরির মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় এসেছিল।
ইউনূসকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ভদ্রলোক, বিশ্নখ্যাতিও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সামান্য একটা ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে পারবে না বয়সের কারণে- সেটা বলার জন্য পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করেছিলেন। তখন বলেছিলাম- নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু গড়বো। জাতির পিতা বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা করে দেখিয়েছি।
তিনি বলেন, কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথা নিচু করে নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সবাই তার আদর্শে মাথা উঁচু করে বাঁচবো সবাই।
এ দেশে কোনো হতদরিদ্র থাকবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা ভূমিহীনদের নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। শেষ করে যেতে পারেননি। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করে চলেছি।
এ সময় কৃষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। আপনারা প্রতিটি জমিতে চাষাবাদ করুন।
তিনি বলেন, সারের দাম আমরা কমিয়েছি। ভর্তুকি দিয়েছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। কারও কোনো সমস্যা হলে আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের পাশে দাঁড়ান। এভাবে আমরা মানুষের উন্নয়ন করছি।
এর আগে পদ্মা সেতু হয়ে রেল উদ্বোধনের জন্য মাওয়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টায় তিনি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌঁছান। এর আগের সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সড়ক পথে মাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন এক রেলযুগে প্রবেশ করবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। এ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে।
উদ্বোধনের পর মাওয়া স্টেশন থেকে একটি বিশেষ ট্রেনে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রীপরিষদ সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের যাত্রী হওয়ার কথা রয়েছে। চীন থেকে আমদানি করা ১৪টি কোচ দিয়ে ট্রেনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
নতুন রেলপথটি ঢাকার গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাদারীপুর-ফরিদপুর গেছে। আগামী বছর এই রেলপথের বাকি অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত চালুর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।
খুশির এ মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন সড়ক সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ও ডিজিটাল ডিসপ্লে দিয়ে। এসবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে শুভেচ্ছা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা জানান, ভাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে দুই লক্ষাধিক মানুষ জমায়েতের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ফরিদপুরে সর্বশেষ জনসভা করেন শহরের রাজেন্দ্র কলেজে ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন