
বগুড়ায় হরতালে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের গালাপট্টি সড়কে এই সংঘর্ষ শুরু হয়৷ হরতালের সমর্থনে বিএনপি নেতাকর্মীরা দফায় দফায় হাতবোমা নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ক্যাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজী জুয়েলসহ গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ৭ জন নেতাকর্মী। এছাড়াও বিএনপির ৫ জন সমর্থকের আহত হওয়ার খবর মিলেছে।
রোববার বিএনপির-জামায়ত ও সমমনা দলের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগ শহরের সাতমাথায় শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। একই সময় হরতালের সমর্থনে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের নবাববাড়ী সড়কে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মিছিল নিয়ে গালাপট্টি সড়কে আসলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সকাল সাড়ে ৯ টায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ দফায় দফায় চলে দুপুর পর্যন্ত। ঘটনাস্থলে পরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থানে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে ত্রি-হুইলার, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলসহ সবরকম যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে দূর পাল্লার যাত্রীবাহী কোন যানবাহনের দেখা মেলেনি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ব্যাপক পুলিশ মোতায়ন করা ছিলো । এছাড়াও সড়কগুলোতে টহল দিয়েছে র্যাবের একাধিক টহল দল।
হরতালের সমর্থনে বগুড়া সদর উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে পিকেটিং চলেছে। উপজেলার বারোপুর মোড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কও বাঘোপাড়া খোলারঘরে স্থানীয় বিএনপি সমর্থকরা পিকেটিং করেছে। এই সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীনের সরকারি গাড়িসহ ভাংচুর করা হয় অন্তত ২০টি গাড়ি। মহাসড়কের দুইপাশে পণ্যবাহী যানবাহনে দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া দিলে পিকেটাররা পালিয়ে যায়৷ এর কিছুক্ষণ পরে আবারও পিকেটিং শুরু করে নেতাকর্মীরা৷
গাড়ি ভাংচুর বিষয়ে সদর ইউএনও ফিরোজা পারভীন বলেন, সরকারি কাজ শেষে সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়ন থেকে ফেরার পথে হরতালের সমর্থনকারীরা আকষ্মিক ইট পাটকেল ছুড়ে তার গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলে যদিও তাৎক্ষণিক এলাকা ত্যাগ করায় তিনি আহত হননি। তবে পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত ছিলো।
এদিকে জেলায় প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে ছিলো সদরের বাঘোপাড়া বন্দর যেখানে হরতালের সমর্থনে বিএনপি নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে দিনব্যাপী যেখানে আইপনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গণমাধ্যমকর্মীরাও দুপুর পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারেনি।
সার্বিক বিষয়ে সন্ধ্যায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম জানান, জেলায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় মোতায়েন ছিলো দিনব্যাপী। বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং এর খবর পাওয়া গেলেও পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বগুড়া জেলা পুলিশ কাউকে ছাড় দেবেনা। এছাড়াও যারা যারা এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গাড়ি ভাংচুরসহ বোমাবাজি করেছে তাদেরকেও দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে মর্মে জানান এই কর্মকর্তা।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন