বাংলাদেশের গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টির জন্য দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। এ জন্য ২১ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দুই হাজার ৩১৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা (আজকের হিসাবে, প্রতি ডলার ১১০.২৩ টাকা ধরে)।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বোর্ড এ অর্থের অনুমোদন দেয়। বিশ্বব্যাংকের এ ঋণ পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে।
বুধবার (১ নভেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ঢাকা অফিস জানায়, বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক বোর্ড আজ বাংলাদেশ ‘এনহ্যান্সিং ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড বেনিফিট ফর আর্লি ইয়ারস (বিইআইবিইওয়াই); প্রকল্পের আওতায় ২১ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। সংস্থাটির এ অর্থে দেশের প্রায় ১৭ লাখ গর্ভবতী নারী সরাসরি উপকৃত হবেন।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টির উন্নতির পাশাপাশি কাউন্সেলিং পরিষেবা দেওয়া হবে। এছাড়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারে চার বছরের কম বয়সী শিশু রয়েছে, সেসব পরিবারের মায়েরাও এ সুবিধা পাবেন।
বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বর্তমান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অধীনে, বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী একটি শিশু কেবলমাত্র ৪৬ শতাংশ উৎপাদনশীল হয়। কিন্তু এটি পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। নারীদের প্রসবের আগে এবং শিশুদের জন্মের প্রথম এক হাজার দিনে পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করা। শৈশবকাল জুড়ে প্রতিক্রিয়াশীল যত্ন নেওয়া শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ও সুস্বাস্থ্যের জন্য সহায়তা করা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে করে প্রত্যেক শিশুকে আরও উৎপাদনশীল হতে এবং তারা বড় হওয়ার পরে বেশি উপার্জন করতে সক্ষম হবে।
তিনি জানান, মানব উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অর্জন সত্ত্বেও, শিশুদের মধ্যে দুর্বল পুষ্টি এবং দারিদ্র্যের জন্য শিক্ষা পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশে একটি চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। কোভিড ও লকডাউনের সময় এটি আরও বেড়েছে। এ প্রকল্পটি শিশুদের গুণগত শিক্ষার বিকাশ এবং তাদের ভবিষ্যৎ উৎপাদনশীলতার জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। প্রকল্পটি সরকারের বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি, মা ও চাইল্ড বেনিফিট প্রোগ্রামের (এমসিবিপি) সম্প্রসারণ এবং শক্তিশালীকরণে সহায়তা করে প্রাথমিক শৈশব বিকাশে অবদান রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সোশ্যাল প্রোটেকশন ইকোনমিস্ট এবং প্রকল্পের টিম লিডার আনেকা রহমান জানান, দারিদ্র্য, পিতামাতার কষ্ট, বয়স-উপযুক্ত ব্যস্ততা এবং উদ্দীপনার অভাব হলে কিছু ঝুঁকি শিশুদের সর্বোত্তম বিকাশকে বিপন্ন করে তোলে। গর্ভবতী নারীদের জন্য সঠিক পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রাথমিক পর্যায় থেকে শিশুদের সহায়তা করা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও জনসংখ্যাগত সম্ভাবনাকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে পারে। একটি শিশুর জীবনের প্রথম দিকে বিনিয়োগ করা, বিশেষ করে তাদের গুরুত্বপূর্ণ বিকাশের বছরগুলোতে পুরো জাতির জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা হতে পারে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন