অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজারই শিশু। বিভিন্ন দেশের সমালোচনা-নিন্দার পরেও হামলা বন্ধ করছে না ইসরায়েল। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বার বার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে গাজার হাসপাতালগুলোতে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন খান ইউনিসে অবস্থিত আল নাসের হাসপাতালের এক চিকিৎসক।
তিনি বলেন, আমরা এখন পুরো বিশ্বকে আহ্বান জানাচ্ছি, দয়া করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিশ্বের যে কোনো রাজনীতিবিদ যে বা যারা হাসপাতালে এভাবে যদ্ধাপরাধ বন্ধ করতে পারছেন না তাদের হাতও রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানে পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। হাসপাতালগুলোতে সব দরজা খোলা অথচ আমরা আমাদের রোগীদের কোনো ধরনের চিকিৎসা সহায়তা দিতে পারছি না। এটা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। আমরা ক্রমাগত এ ধরনের যুদ্ধাপরাধ মেনে নিতে পারি না।
গাজার প্রধান হাসপাতাল আল-শিফা, আল-কুদস, আল-রানতিসি এবং ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের একেবারেই কাছে এখন ইসরায়েলি বাহিনী অবস্থান নিয়েছে। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সারাদিন ধরেই হাসপাতালগুলোর আশপাশে এবং ভেতরেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েল বারবার অভিযোগ করে আসছে যে, আল-শিফা হাসপাতালের নিচের টানেলে হামাস অবস্থান করছে। তবে এ বিষয়টি অস্বীকার করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগঠন হামাস।
এক নারীর করা একটি ভিডিও যাচাই করে দেখা গেছে যে, সেটি গাজা শহরের আল-রানতিসি হাসপাতালের ভেতরে করা। সেখানে তিনি বলছেন যে, এই শিশু হাসপাতালটি চারদিকে ট্যাঙ্ক দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং এখানে আশ্রয় নেওয়া সবাইকে চলে যেতে বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, উত্তর গাজার এই হাসপাতালগুলো নিজেদের সামর্থ্যের ‘চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে’ এবং হাজার হাজার মানুষের জীবন এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।
আল শিফা হাসপাতালের ডাক্তার সালামিয়া এই পরিস্থিতিকে ‘ভয়ংকর’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি তার চারদিকে গুলি এবং বোমার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে গাজার হাসপাতাল আল-নাসর থেকে সাদা পতাকা হাতে শিশু ও বয়স্কদের বের হতে দেখা যায়। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর প্রায় সাড়ে চার হাজারই শিশু।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন