আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে অংশ নিতে ঢাকা-১০, মাগুরা-১ ও ২ আসনের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের খবরে দেশব্যাপী আলোচনা সৃষ্টি হলেও মাগুরায় কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। তার জেলার দুটি আসনের প্রার্থী হয়ার খবর নিয়ে আলোচনা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরই হবেন মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী। অন্যদিকে মাগুরা-২ আসনে একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার দলের জন্য নিবেদিত। সাকিবকে তারা কখনো স্থানীয় রাজনীতি বা এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে দেখেননি। তবে মনোনয়নের বিষয়ে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই শেষ কথা।
মাগুরায় সাকিব আল হাসানের বাড়ি শহরের কেশব মোড়ের সাহাপাড়ায়। এটি মাগুরা-১ আসনের মধ্যে। সদর উপজেলার একটি পৌরসভা, ৯টি ইউনিয়ন ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। এই আসনের আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বেশিরভাগই বর্তমান সংসদ সদস্যের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এই নেতাদের কাছে সাকিব আল হাসানের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করাটা অনাকাঙ্ক্ষিত।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, সে যে মনোনয়ন ফরম কিনছে, এটা আমি, আমার সভাপতি বা দলের কেউ জানে বলে আমার মনে হয় না। আমি ৩৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই সময়ে আমি কখনো সাকিব বা তার পরিবারের কাউকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা দেখিনি। তাদের এই দলের প্রতি কোনো অবদান আছে বলেও মনে হয় না।
শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমাউনূর রশীদ মুহিত বলেন, আমার মনে হয় তার (সাকিব আল হাসান) আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদও নেই। তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন।
শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলা ও সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাগুরা-২ আসনের জন্যও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন সাকিব। এ বিষয়ে শালিখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল কুমার দে বলেন, মনোনয়নের ব্যাপারটা তো নেত্রীর হাতে। নেত্রী যাকে দেবেন, তাকে নিয়েই আমাদের নির্বাচন করতে হবে। অন্য জায়গার কথা তো বলতে পারব না- এই শালিখা উপজেলায় রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে বা কারও সঙ্গে তার (সাকিব আল হাসান) কোনো সম্পর্ক আছে বলে আমার জানা নেই। তবু আকাশ থেকে কোনো তারা এনে যদি এখানে দিয়ে ফেলে, আমরা তা–ই নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ব। কোনো অসুবিধা নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, মনোনয়ন যে কেউ কিনতেই পারেন। কিন্তু আমরা মনে করি, দলের জন্য যারা দীর্ঘদিন ধরে নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন, ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যাদের অবস্থান, এমন মানুষকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিত। সে (সাকিব আল হাসান) কখনো জনগণের সঙ্গে মাঠে কাজ করেছে বা কোনো দলের রাজনীতি করেছে বলে তো শুনিনি। নেত্রী ভালো বুঝবেন কাকে মনোনয়ন দিলে ভালো হয়, তার কাছে সব তথ্যই আছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন