ঠিকাদারদের দখলে কাজীপুরের শহীদ এম. মনসুর আলী ইকোপার্ক | Daily Chandni Bazar ঠিকাদারদের দখলে কাজীপুরের শহীদ এম. মনসুর আলী ইকোপার্ক | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪ ২৩:৫৬
ঠিকাদারদের দখলে কাজীপুরের শহীদ এম. মনসুর আলী ইকোপার্ক
কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

ঠিকাদারদের দখলে কাজীপুরের শহীদ এম. মনসুর আলী ইকোপার্ক

কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের ঢেকুরিয়া গ্রামে যমুনা নদীর তীরে স্থাপিত শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ইকোপার্ক যেনো সরকারি কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের পরিবেশ বিরোধী কর্মকান্ডের পৈত্রিক সম্পত্তি হয়ে উঠেছে। কখনো কংক্রিটের ব্লক কারখানা আবার বিটুমিন পোড়ানোর চুল্লি স্থাপন বা পাথর ভাঙার ভারি মেশিন স্থাপন করে স্থানীয়দের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলছে তারা, স্থানীয় স্বার্থান্বেষী মহলের যোগসাজশে পরিবেশ বিরোধী এমন কর্মকা- প্রশাসনের নাকের ডগায় চললেও দেখার যেনো নাই কেউ। 

প্রকল্পের সাইনবোর্ড সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলাধীন কাজীপুর উপজেলায় শহীদ এম মনসুর আলী ইকোপার্ক স্থাপনের মাধ্যমে বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি (প্রথম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। 
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিরাজগঞ্জ এবং  সামাজিক বন বিভাগ, পাবনা। পরবর্তীতে ৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ভূমি উন্নয়ন এবং ১৮ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বৃক্ষরোপণ করে উপজেলা বন বিভাগ। 
সরেজমিনে গত ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা যায়, পার্শবর্তী একটি সড়ক সংস্কার করছে উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়, সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা এন্ড কোং কার্পেটিংয়ের জন্য পাথর ভাঙার মেশিন এবং বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বিটুমিন গলানোর চুল্লি বসিয়েছে। পাথর ভাঙা মেশিনের ধুলো এবং চুল্লি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া স্থানীয় প্রায় ৩ সহাশ্রাধিক বাড়ির কয়েক হাজার মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। 
ইকোপার্কের দোকানি নুরুল ইসলাম বলেন, ধুলা আর ছাইয়ের জন্য ভাতটাও ঠিক মতো খাইতে পারিনা, এখানে থাকাই মুশকিল, এ সময় তিনি তার দোকানের পণ্যের উপর ছাই ধূলোর প্রলেপ দেখান। 
ঢেকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মোকছেদুল জানান, ছাই ও ধুলায় পুরো এলাকা একাকার, ঘরের চাল, আসবাবপত্র, গাছ সবকিছুতেই ছাই, ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের ঠিকাদাররা এখানে কংক্রিটের লক্ষ লক্ষ ব্লক তৈরি করতো, এখনো কয়েকশ ব্লক রয়েছে। এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সাংবাদিক দেখে সরে পরে। 
উপজেলা বন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ঠিকাদারি লিখিত আবেদন করেছে, তবে অনুমতি দেয়া হয়নি, আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মোমেনা পারভীন বলেন, এ ধরনের কর্মকা- লোকালয়ে না করা ভালো, শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা হতে পারে, শিশু ও বয়স্কদের সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। 
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন