
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ২৮টি পদের মধ্যে ১৫ পদে নেই চিকিৎসক। শূন্য পদগুলোর মধ্যে অধিকাংশই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তালিকায়। ফলে চিকিৎসক সংকটের কারণে একদিকে যেমন চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দূর দূরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
জানা গেছে, উপজেলাবাসির চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা লক্ষে ১৯৮৪ সালে ৩১ শষ্যা রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপতি হয়। এরপর ২০১২ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট করা হয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ২৮টি পদ রয়েছে। তার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার ৯ জন, বিশেষজ্ঞ শিশু ও গাইনি দুইজন ও ডেন্টাল সার্জন ১ জনসহ মোট ১৩ পদে চিকিৎসক আছে। আর ১৫ পদে নেই চিকিৎসক। শূন্য ১০টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদের মধ্যে সার্জারী, অ্যানাসথেসিয়া, মেডিসিন, চক্ষু, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিক্স, কার্ডিওলজিসহ ৮ পদে নেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এছাড়া আরএমওসহ সাতটি মেডিক্যাল অফিসার পদে চিকিৎসক নেই।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রতিদিন প্রায় ৪শ’ থেকে ৫শ’ বিভিন্ন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মেডিক্যাল অফিসার ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেন রোগীরা। ফলে চড়ম ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী। আর রোগীর ভিড়ে চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আবার বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন পদে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সেবা নিতে এসে ঘুরে যাচ্ছেন অনেক রোগী। হস্তান্তর করা হচ্ছে বিভিন্ন মেডিকেলে।
চিকিৎসা নিতে আসা যুুুবক নূর ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেল চালানোর সময় চোখে পোকা পড়ে আমার চোখ লাল হয়ে গেছে। চোখে প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছিল। এ জন্য রাণীনগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আছি। এসে জানতে পারলাম হাসপাতালে চক্ষু বিশেসজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তাই বাধ্য হয়ে জরুরী বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করি। পরে নওগাঁতে যাই।
আয়েশা আক্তার নামে এক নারী বলেন, আমার গলার সম্যসার কারণে ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে উপজেলা হাসপাতালে যাই। এরপর দেখি নাক-কান-গলার হাসপাতালে চিকিৎসক নেই। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে আসি।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খান বলেন, ২৮টি পদের মধ্যে চিকিৎসকের ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো আছে। এখন পর্যন্ত শূন্য পদে কোন চিকিৎসক পাইনি। তিনি বলেন, চিকিৎসক সংকট থাকলেও কষ্ট করে আমরা রোগীদের সেবা দিয়ে আসছি। চিকিৎসক সংকটের সমস্যা সমাধান হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাণীনগরবাসী আরো ভালো চিকিৎসা সেবা পাবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন