রাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার | Daily Chandni Bazar রাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০২৪ ১৯:৪২
কোটা সংস্কার আন্দোলন
রাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

রাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিবৃতি প্রদান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর একাংশ

দাবি আদায়ে ৩০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে সকল প্রকার কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা একাংশ শিক্ষার্থীবৃন্দ। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবি আদায় না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবারও আন্দোলনে নামার হুশিয়ারী দিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুশিয়ারী দেন নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে রাবিতে সংঘটিত আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থী মোকাররম হোসেন বলেন, আমরা সারাদেশের ন্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আন্দোলন করে বর্তমানে একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আমাদের একদফা দাবিটির সন্তোষজনক সমাধান হয়েছে। এতে সারা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ সন্তুষ্ট। তবে আন্দোলনের মধ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮দফা দাবি ছিলো। ৮ দফা দাবির মধ্যে কোটা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কারফিউও শিথিল করা হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ইন্টারনেট সেবাও চালু হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসবের বাইরে আমাদের দাবি হল- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশাসন কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে অবস্থান করতে হবে। আবাসিক হলগুলোতে শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নিয়ে অতি দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা দেখতেছি সরকার ধীরে ধীরে আমাদের সকল দাবি মেনে নিচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ থেকে সকল ধরণের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো তৃতীয় পক্ষ এসে আমাদের অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করবে, এই সুযোগ আমরা আর দেব না। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ৮দফা দাবি পরিপূর্ণ করে সারা বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করবে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা আবারও মাঠে নামব।
রাবি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের মামলা দায়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনও মামলার বিষয়ে শুনিনি। যদি আমাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হয়ে থাকে তাহলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। কারণ আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো সহিংস কর্মকান্ডে জড়িত ছিলাম না। আইনমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন, অবশ্যই এই মামলা প্রত্যাহার হবে। এই মামলা প্রত্যাহার না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।
সংবাদ সম্মেলনে মোকাররম হোসেন ছাড়াও রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষাথী তোফায়েল আহমেদ ও মনিমুল হক এবং আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান গাজী মহারাজ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বিকেলে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন হলকক্ষ ভাঙচুর ও বাইকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রাবি শিক্ষার্থীসহ ২০জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাইয়ুম মিয়া বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় এই মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা ৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে তোফায়েল আহমেদ এবং মনিমুল হকও এই মামলার অন্যতম আসামী।