বগুড়ায় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না কাবিলার | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না কাবিলার | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২ আগস্ট, ২০২৪ ১৯:২১
বগুড়ায় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না কাবিলার
স্ত্রীকে ধর্ষনের প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক

বগুড়ায় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না কাবিলার

নিহত কাবিলা (৩২)

বগুড়ায় স্ত্রীকে ধর্ষনের প্রতিবাদ করায় জিলাদার ওরফে কাবিলা (৩২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার  ভোরে সদরের এরুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানায়, পেশায় মাংস বিক্রেতা কাবিলা শুক্রবার ভোরে শহরের গোদারপাড়ায় দোকানে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। পথিমধ্যে বাড়ির সামনে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। প্রাণ বাঁচাতে কাবিলা এলাকার একটি মসজিদে আশ্রয় নিলে দুর্বৃত্তরা সেখানেই তাকে কুপিয়ে রেখে চলে যায়।
 
স্ত্রীকে ধর্ষনের ঘটনা জেনে গত বুধবার আরিফুল ও আমিন নামের দুই যুবককে মারপিট করে কাবিলা এর জের ধরেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেন নিহতে মা শিরিনা বেওয়া ও বোন সফুরা বেগম।
 
নিহতের মা ও বোন জানান, আরিফুল কাবিলার ভাগিনা। আর আমিন আরিফুলের বন্ধু এবং ভগ্নিপতি। কাবিলা ছয় বছর আগে বিয়ে করে। তিন বছর আগে থেকে আরিফুল তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে আসছিল। কিছুদিন আগে আরিফুল তার স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করে। এরপর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ করে।
 
কাবিলার স্ত্রী জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে একটি ১০০ টাকার নোট জানালা দিয়ে তার ঘরে পড়ে। তিনি টাকা হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে দেখে আরিফুল ও আমিন দাঁড়িয়ে আছে। তারা ঘরে প্রবেশ করতে চায়। এমন সময় কাবিলা বাড়িতে আসলে আরিফুল ও আমিন পালিয়ে যায়। পরে রাতে কাবিলাকে তার স্ত্রী পূর্বের ঘটনাসহ বিস্তারিত জানায়। পরদিন দুপুরে আরিফুল ও আমিন গ্রামের রাস্তায় বসে ছিল। সেসময় কাবিলা পিছন থেকে গিয়ে লাঠি দিয়ে দুইজনকেই মারপিট করে। আরিফুল বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ধর্ষণের বিষয়ে কাবিলাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার কাবিলা আদালতে গিয়ে আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করেন। ধর্ষণ মামলা দায়ের করার জন্য রোববার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে যেতে বলেন তার আইনজীবী।
 
নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘আরিফুল ও আমিন বুধবার দুপুরের পর থেকে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। শুক্রবার ভোরে সে গোদারপাড়া বাজারে মাংসের দোকানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এরপরই তারা তাকে ধাওয়া করে মসজিদের ভিতর কুপিয়ে হত্যা করে।’
 
এরুলিয়া বড় জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মোহাম্মদ আসলাম হোসেন বলেন, ‘আমি ফজরের আজান দিয়ে মসজিদের দরজা খুলে দিয়ে ওয়াশ রুমে যাই। এরমধ্যেই মজসিদের বারান্দায় শব্দ শুনতে পাই। ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনে পড়ে থাকতে দেখে মসজিদের মাইকে ঘটনাটি গ্রামবাসীকে জানাই। পরে গ্রামের লোকজন এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
 
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, ‘নিহত'র  স্ত্রীকে ইতিপূর্বে ধর্ষণের জের ধরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। ঘটনার পর থেকে আরিফুল, আমিন ছাড়াও আরও একজন পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে। নিহত কাবিলার মরদেহ মর্গে রয়েছে।’