রংপুরে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে শিক্ষক—আইনজীবী—অভিভাবকরা | Daily Chandni Bazar রংপুরে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে শিক্ষক—আইনজীবী—অভিভাবকরা | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৩ আগস্ট, ২০২৪ ১৮:২৯
Student Movement
রংপুরে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে শিক্ষক—আইনজীবী—অভিভাবকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুরঃ

রংপুরে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে শিক্ষক—আইনজীবী—অভিভাবকরা

রংপুরে প্রেস ক্লাবের সামনে বিরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল। ৩ আগস্ট, ২০২৪, ছবি: জালাল উদ্দিন, রংপুর।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণের ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ, মামলা, নির্যাতন ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবি আদায়ে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এতে সরকারি—বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন  শিক্ষক, আইনজীবী অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি—পেশার মানুষ।  শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বৃষ্টির মধ্যে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। এর আগে সকাল ১০টার আগে থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে নগরীর বিভিন্ন নিরাপত্তা চৌকিতে তল্লাশির মুখোমুখি হয়ে রংপুর জিলা স্কুল, রংপুর সরকারি কলেজ, কারমাইকেল কলেজ, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রংপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রংপুর মেডিকেল কলেজ, বেগম  রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন স্কুল—কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়ো হন প্রেসক্লাবের সামনে। বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও। সেখানে রাস্তার একপাশ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন অভিভাবকরাও। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। এ সময় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই, লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে, ভুয়া ভুয়া পুলিশ ভুয়া, খুনি খুনি পুলিশ খুনি’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন তারা। এ সময় সাদা কাগজে লাল কালিতে বিভিন্ন স্লোগান বাংলা ও ইংরেজিতে লিখে প্রদর্শন করছে তারা। সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বেলা ১২টার দিকে রওয়ানা দেয় শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়, পায়রা চত্বর, নগর ভবন, টাউন হলের সামনে, কাচারী বাজার, ডিসির মোড় বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল চত্বর, লালকুঠি, চেকপোস্ট, মেডিকেল মোড়, ধাপ আটতল মসজিদ মোড় হয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার হেটে রংপুর টাউন হলের সম্মুখে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শপথগ্রহণ শেষে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে রোববার থেকে পূর্বঘোষিত ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রাচুর্যের জানালেন, যতদিন আমাদের দাবি সরকার মেনে নেবে না, যতদিন আমাদের যে ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন তাদের পক্ষে সুষ্ঠু মামলা হবে না, ততদিন আমাদের এই আন্দোলন চলছে, চলবে।  ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জানালেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন আমাদের শহীদ ভাইদের হত্যাকারীদের বিচার না করবেন, ততদিন আমরা মাঠে থাকবো। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। আর সরকার যেন শিক্ষার্থীদের আর হয়রানি না করে। আমরা রাতে ঘুমাইতে পারি না। আমাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করে। কখন আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা কী সহিংসতা করেছি? আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে নেমেছিলাম। আমাদের মারা হলো কেন? আমাদের ভাইয়ের রক্তের হিসাব আমরা চাই। এদিকে বিক্ষোভ থেকে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নগরজুড়ে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৩টা) শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচি ঘিরে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে।