
অভাবের সংসারে স্ত্রী ও সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে দুই বছর পূর্বে দেশের গন্ডি পেরিয়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লাল মিয়া। পরিচয় ছিল পাশের এলাকার দীর্ঘদিন সৌদি আরবে অবস্থান করা নুরুন্নবী নামে একজন আদম ব্যবসায়ীর সাথে। কিন্তু সেই আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউপির বিজরুল দানিয়াগাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে মোঃ লাল মিয়া (৫৪)। এই ঘটনায় লাল মিয়ার ছেলে রাকিবুল হাসান (১৮) বাদী হয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউপির বিশা গ্রামের মৃত হামেদ আলী মন্ডলের ছেলে মোঃ নুরুন্নবী (৩৫) ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগমের (৩০) নামে বগুড়া সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদী রাকিবুল হাসানের পিতা লাল মিয়া ও নুরুন্নবী পূর্ব পরিচিত হওয়ায় উভয়ের মধ্য সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের সুবাদে অসচ্ছল লাল মিয়াকে সৌদি আরবে পারি জমানোর পরামর্শ দেয়। তার পরামর্শে লাল মিয়া সৌদি আরব যেতে রাজি হয়। এর একপর্যায়ে তিন বছর মেয়াদী ভিসা ও দোকানে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে দু-দফায় ৪লক্ষ টাকা নেয়। এরপর নুরুন্নবী লাল মিয়ার ভিসা ও টিকিটের ব্যবস্থা করেন টিকিট পেয়ে লাল মিয়া গত ২০২৩ সালের ২৫ শে সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে যায়। সৌদি আরবে পৌছানোর পর নুরুন্নবী লাল মিয়াকে কাজে যোগদান না করায়ে সময় ক্ষেপন ও পালিয়ে থাকতে বাধ্য করে। এভাবে দীর্ঘ সাত মাস অতিবাহিত হলেও কাজে যোগদান না করতে পেরে লাল মিয়া পালিয়ে সৌদি আরবের বিভিন্ন বন-জঙ্গলে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে ফোনে লাল মিয়া তার পরিবারকে জানালে তার পরিবার থেকে নুরুন্নবীর স্ত্রীর কাছে তাদের দেওয়া ৪লক্ষ টাকা ফেরত চায়, তখন নুরুন্নবীর স্ত্রী টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে। এমতাবস্থায় নুরুন্নবীর প্রতারণার শিকার হয়ে সৌদি আরবে লাল মিয়া ও দেশে তার পরিবার চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে লাল মিয়ার ছেলে রাকিবুল হাসান জানান, নুরুন্নবী ও তার স্ত্রী চালাকি করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা আশ্বাসে আমার পিতাকে সৌদি আরবে নিয়ে গিয়ে চরম বিপদের মধ্যে ফেলেছে। টাকা নেওয়ার সময় নুরুন্নবী ভিসার মেয়াদ তিন বছর দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি ৯০ দিন সময়ের ফ্রি ভিসা দেন। আমরা তার এই প্রতারণার বিচার চাই।